শেষ হলো ৫১তম বিশ্ব ইজতেমা
আখেরি মোনাজাতে মানবজাতির কল্যাণ, সমৃদ্ধি এবং বিশ্ব শান্তি ও মুসলিম উম্মাহর ঐক্য কামনার মাধ্যমে শেষ হলো ৫১তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। রবিবার বেলা ১১টা ৪ মিনিটে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের মোনাজাত শুরু হয় এবং শেষ হয় বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে।
তাবলিগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বি দিল্লির মারকাজের শূরা সদস্য হজরত মাওলানা মুহাম্মদ সাদ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন।
প্রথম পর্বের মোনাজাতও পরিচালনা করেছেন তিনি। তাবিলেগের এই মুরব্বি আরবি ও উর্দু ভাষায় মোনাজাত করেন। মোনাজাতের আগে হেদায়েতি বয়ান করেন তিনি।
মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গুনাহ মাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজত করার জন্য ২ হাত তুলে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে রহমত প্রার্থণা করা হয়।
এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে মধ্যাহ্নের আকাশ-বাতাস মুখরিত করে মহামহিম ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় লাখ লাখ মুসল্লি আকুতি জানান।
মাঠ, রাজপথ, ঘরবাড়ির ছাদ, তুরাগের দুই তীর, কিনারে ভিড়ে থাকা নৌকা, পথে দাঁড়িয়ে থাকা যানবাহনে বসে কিংবা দাঁড়িয়ে দুই হাত তুলে কাতরস্বরে মহান আল্লাহর কাছে মিনতি করে প্রার্থনা করেন ধর্মপ্রাণ অগণিত মানুষ।
এর আগে ভোর থেকেই মোনাজাতে অংশ নিতে টঙ্গীর তুরাগ তীরে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে। ফজরের নামাজের পরই টঙ্গী শহর, ইজতেমাস্থল ও এর আশপাশ এলাকা জনসমুদ্রে পরিণত হয়। বাস, ট্রেন, ট্রাক, রিকশা, ভেন, নৌকা এমনকি হেঁটে লাখো মুসল্লির গন্তব্য হয়ে উঠে ইজতেমা মাঠ।
ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের প্রথম দিনই জর্ডান, লিবিয়া, আফ্রিকা, লেবানন, আফগানিস্তান, ফিলিস্তিন, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরাক, সৌদি আরব, ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ডসহ বিশ্বের ৯৬ দেশ থেকে ৬ হাজার ৫১৮ মুসল্লি আসেন।
আগের পর্বে অংশ নেয়া অনেকেই ছিলেন আগে থেকেই। ভাষাভাষী ও মহাদেশ অনুসারে ময়দানে ৩ তাঁবুতে অবস্থান নেন মেহমানরা।
১৯৪৬ সালে প্রথম কাকরাইল মসজিদে ইজতেমা আয়োজন করা হয়। ১৯৬৬ সালে গাজীপুরে টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে বর্তমান ময়দানে স্থানান্তর করা হয় বিশ্ব ইজতেমা। এরপর ২০১১ সাল থেকে ২ দফায় বিশ্ব ইজতেমার আয়োজন করা হয়। স্থান সংকুলান না হওয়া, অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন অসুবিধা ও নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এ ব্যবস্থা করা হয়। আর চলতি বছর থেকে দুই পর্বে ৩২ জেলার মুসল্লিদের অংশ নেয়ার নির্দেশনা দেয় আয়োজক কমিটি। বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা অংশ নেবেন আগামী বছর।