হিজাবের পক্ষে ঢাকায় মেয়েদের সাইকেল র্যালি
হিজাব পড়ে যে নারীরা সব কাজ করতে পারে এটা দেখানোর লক্ষ্যে রাজধানী ঢাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তিনজন তরুণী গতকাল সোমবার সাইকেল র্যালি করেছেন। সাইক্লার্স অব বাংলাদেশের নামে একটি সংগঠনের তিনজন তরুণীর সঙ্গে ক’জন তরুণও হিজাব পড়ার সমর্থনে সাইকেল র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
লালবাগ সাইক্লিং ক্লাবের প্রধান সিফাত-ই-কানিজ বলেছেন, “ধর্মীয় বিশ্বাস থেকে হিজাব পড়লেও এ কারণে অনেক জায়গায় কাজ করা যায় না। আমি কয়েকটা চ্যানেলে কাজ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি হিজাব পড়ি বলে। তাই আমি সাইকেল চালিয়ে প্রমাণ করতে চাই যে হিজাব করে সব করা সম্ভব”।
অন্যদিকে নারী আন্দোলন যারা করেন তাদের একজন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের আয়েশা খানম বলেছেন, “ফ্রিডম অব চয়েস সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। পোশাক পরিধানে যে কারো স্বাধীনতা থাকতে পারে। তবে যে পোশাকেই নিজেকে ঢেকে রাখা হোক না কেন, মন যেন উন্মুক্ত থাকে,” এমনটাই বলেন আয়েশা খানম। তিনি আরো বলেন, এক সময় নারীদের অবরোধ করে রাখা বা পর্দাপ্রথার মধ্যে রাখা এগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই হয়েছে, নারী আন্দোলন হয়েছে। এখন একুশ শতকে এসে অনেকে মনে করছেন এটা আমাদের অধিকার। ফ্রিডম অব চয়েস সবার আছে তবে মনকে যেন কেউ বদ্ধ না করে ফেলে এটাই আমাদের চাওয়া। এখন যে নারীরা হিজাব পড়লে সাইকেল চালাতে পারছে বাইরে বেরুতে পারছে এটা একসময়কার নারী আন্দোলনের ফল বলেও উল্লেখ করেন আয়েশা খানম। হিজাব দিবসের মতো একটি দিবসের পালনের আহ্বানকারী নাজমা খান নিউইয়র্কে বসবাসরত বাংলাদেশি নাগরিক। দিবসটি পালনের জন্য নাজমা খান প্রথমে ইন্টারনেট-ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সব নারীর প্রতি আহ্বান জানান।
নাজমা খান মাত্র ১১ বছর বয়সে বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় গিয়েছিলেন। কিন্তু কী কারণে হিজাব দিবস পালনের আহ্বান জানিয়েছেন নাজমা খান? নাজমা খান বলেছেন, তিনি যখন হিজাব মাথায় স্কুলে যেতেন, তখন তাকে অনেক সময় অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হতে হতো। মাধ্যমিক স্কুলে পড়ার সময় তাকে ব্যাটম্যান এবং নিনজা বলে ডাকা হতো। এমনকি ৯/১১ এর হামলার পর তাকে ডাকা হত ওসামা বিন লাদেন এবং সন্ত্রাসী বলে। হিজাব পড়া নারীদের অনেক সময় অনেক বৈষম্যের শিকার হতে হয়-বলেন মিস খান। আর এই বৈষম্যের অবসান ঘটানোর উদ্দেশ্যে তিনি তার অমুসলিম বোনদেরকেও অন্তত একদিনের জন্য হিজাব পড়ে তাদের অভিজ্ঞতার কথা বলার আহ্বান জানিয়েছেন।