বিস্ফোরকের মতো ছড়াচ্ছে জিকা ভাইরাস
জিকা ভাইরাস বিস্ফোরকের মতো ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন দেশে। আগামী এক বছরে উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোতে ৩০ থেকে ৪০ লাখ মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে সতর্কতা জারি করেছে সংস্থাটি।
মশাবাহিত এই রোগটি নিয়ে ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে বিশ্বব্যাপী। এডিস ইজিপ্টি নামের মশার কামড়ের মাধ্যমে এই ভাইরাস মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। এখনো পর্যন্ত এর কোনো চিকিৎসা বা ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়নি। ২০১৫ সাল নাগাদ আফ্রিকা, দণি-পূর্ব এশিয়া এবং দণি ও মধ্য আমেরিকার কয়েকটি দেশে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের দুইজন নাগরিকের শরীরেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার খবর পাওয়া গেলেও বাংলাদেশ এখনো এ ধরনের কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, জিকা ভাইরাস যাদের শরীরে প্রবেশ করবে সবাই অসুস্থ হয় না। সাধারণ এ ভাইরাসে আক্রান্ত প্রতি পাঁচজনে একজনের অসুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অবশ্য এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঘটনা বিরল। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই রোগের উপদ্রপ দেখা দিলেও সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে আমেরিকা মহাদেশে। উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার ২০টিরও বেশি দেশে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে এই রোগ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে আগামী সোমবার জেনেভায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান মার্গারেট চ্যান। তিনি বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক এবং প্রচণ্ড অনিশ্চয়তা রয়েছে এ নিয়ে। আমাদের খুব দ্রুত কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেতে হবে।
ডব্লিউএইচওর প্রধান বলেন, সোমবারের বৈঠকে আমি চাইব আক্রান্ত হলে মানুষ কী করবে এবং যেসব জায়গায় এ রোগের সংক্রমণ হবে সেখানে সহায়তা পাঠানোর সুপারিশ ওই কমিটি জরুরি ভিত্তিতে করবে।
এ দিকে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে চলতি বছর আগস্টে ব্রাজিলে অনুষ্ঠেয় অলিম্পিক গেমস নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে ব্রাজিলেই সবেচেয়ে বেশি জিকা ভাইরাস আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে। তবে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি বলেছে, অলিম্পিক গেমসের খেলোয়াড় ও কর্মকর্তাদের জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচাতে সব রকম চেষ্টাই করবে তারা।