কেমন আছেন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমরা ?
যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন স্থানে একের পর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বিশ্বজুড়ে আলোচনায় এসেছে নানা ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীর নাম। এর ফলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সমপ্রদায়ের মানুষদের। এমনকি ঢালাওভাবে অনেকে সমালোচনা করছেন মুসলিমদের।
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণাতেও এমন মন্তব্য শোনা গেছে। তবে মুসলিমদের অনেকেই মনে করেন মিডিয়ার কারণেই মুসলিমদের সম্পর্কে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে সেখানে।
নিউ হ্যাম্পশায়ারের একটি স্কুলের শিক্ষার্থী দুই ভাইবোন লানা আর লেইফ। লেইফ বলছিল, আমাকে অনেক সময় মানুষ প্রশ্ন করে, ওহ তুমি মুসলিম ? তুমি কোথা থেকে এসেছো ? কিন্তু ইসলাম কি কোনো দেশের ? সারা বিশ্বেই তো মুসলিমরা আছে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারা সংস্কৃতিতে কিভাবে ইসলামকে দেখা হচ্ছে বা চিত্রিত করা হচ্ছে এটি সবার জানা। সে কারণে কি তাদের মধ্যে কোনো ভয় কাজ করছে ?
লেইফ বলছে, আমি ভীত আমার দেশ যুক্তরাষ্ট্রের জন্যে। আমি ভীত সন্ত্রাসী হামলার হয় কিনা সেটা নিয়ে।
স্কুলে বাচ্চাদের যখন পড়াশোনার বিরতি চলছিলো তখন কয়েকজন নারীর সাথে কথা বলেছেন বিবিসি।
সুদান থেকে আসা হিন্দ আর আমাল জানালেন, তিনি স্কুলে এসে হিজাব পড়েন কিন্তু বাইরেও সেটি পড়েন না।
তিনি বলেন, কারণ আমি ভয় পাই। সবাই তাকায় ওহ তুমি মুসলিম। মিডিয়া মানুষকে এমনভাবে ভীত করে তুলেছে। এমনকি স্কুলে আমার বাচ্চাকে একজন বলেছে তুমি মুসলিম, তাহলে তুমি সন্ত্রাসী। এমনকি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রচারণাতেও এসেছে এমন কথা। যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করা মুসলিমদের জন্যে আসলেই কঠিন।
নাইজার থেকে আসা রাবেয়া বলছেন, আমার বাচ্চা স্কুলে যায় এবং সে হিজাব পড়ে। একদিন তার ক্লাসমেট বলে মুসলিমরা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বোমা মেরেছে। এরপর থেকে আমি আর তাকে হিজাব পড়তে দেই না।
তবে ভিন্নমতও রয়েছে কারো কারো মধ্যে। মিসরের মারওয়া বলছিলেন, এটি সত্যি সেপ্টেম্বর ১১ এর পর অনেক প্রতিক্রিয়া হয়েছে। আমার বাচ্চা স্কুলে পড়তো এবং ভয় পাচ্ছিলাম মুসলিম নামের জন্যে কোনো সমস্যা হয় কিনা। কিন্তু আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে তেমন কিছু হয়নি। এটি আসলে পুরোটাই মিডিয়ার সৃষ্টি।
যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিমদের অনেকেই মনে করেন তাদের মুসলিম হিসেবে বিবেচনা না করে যুক্তরাষ্ট্রের হিসেবে বিবেচনা করলেও আর কোনো সমস্যা থাকে না।
কেউ কেউ বলেন, ইসলাম বিষয়ে সবাইকে বোঝাতে যাতে করে অন্যরা বুঝতে পারে ইসলাম কি এবং আমরা কি বিশ্বাস করি।