নিউ ইয়র্ক আ. লীগের সংবর্ধনা প্রস্তুতি সভায় হট্টগোল, মারামারি

Bishwaপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউ ইয়র্ক সফর উপলক্ষে তাকে সংবর্ধনা দেয়ার জন্য আয়োজিত আওয়ামী লীগের প্রস্তুতি সভায় তুমুল হট্টগোল ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় জ্যাকসন হাইটসের ‘পালকি পার্টি সেন্টারে’ ওই ঘটনার পর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভা শেষ হয়েছে কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে পৌঁছানোর কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। তিনি জাতিসংঘে ভাষণ দেবেন ২৭ সেপ্টেম্বর বিকালে।
নিউ ইয়র্কে তাকে সংবর্ধনা জানানোর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে যুক্তরাষ্ট্র ছাত্রলীগ, মহিলা লীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন এবং মহাজোটের শরিক দলের নেতা-কর্মীরা এই সভায় অংশ নেন।
সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ।
সিদ্দিকুর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর জেএফকে এয়ারপোর্টে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ব্যাপক আয়োজন করতে চান তারা।
এছাড়া ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে তার ভাষণের সময় বাইরে শান্তি সমাবেশ এবং ২৮ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ম্যানহাটানের হিলটন হোটেলের বলরুমে শেখ হাসিনাকে সংবর্ধনা দেয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।
বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের বাঙালিদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের পরিকল্পনা জানিয়ে সিদ্দিক বলেন, “গত বছর নিউ ইয়র্কে সংবর্ধনা মঞ্চটি তৈরি করেছিলাম নৌকার আদলে। এবার আরো ভিন্নধর্মী মঞ্চ হবে, যাতে মহাজোট সরকারের উন্নয়ন-অগ্রগতির সুস্পষ্ট চিত্র থাকবে।”
পরিকল্পনার বিস্তারিত জানিয়ে এসব বিষয়ে সবার মতামত চাওয়া হয় সভায়। বিভিন্ন সংগঠনের ১৮ জন মতামত দেয়ার পর মাইক হাতে নেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটি থেকে বহিস্কৃত জসীমউদ্দিন মিঠু।
এ সময় মিঠুর বক্তব্য শুনতে আপত্তি জানিয়ে তার দিকে তেড়ে যান যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভিন, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এ কে এম আলমগীর এবং যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ালি হোসেন।
তারা চিৎকার করে বলতে থাকেন, সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সম্প্রতি মিঠুকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাই তার বক্তব্য দেয়ার অধিকার নেই।
এ থেকে শুরু হয় তুমুল হট্টগোল। মিঠুর পক্ষ ও বিপক্ষ গ্রুপ হাতাহাতিতে জড়ায়।
আইরিন পারভিন এক পর্যায়ে মিঠুর কাছ থেকে মাইক কেড়ে নেন। আর যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহসভাপতি নজমুল ইসলাম অনুষ্ঠানস্থল ত্যাগের হুমকি দেন।
কিছুক্ষণ পর পালকি সেন্টারের মালিক হারুন ভূইয়া পুলিশ ডাকার হুমকি দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।
বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যেই সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান মাইকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে চলতি মেয়াদে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার এটি শেষ জাতিসংঘ সফর। তাই সব ভেদাভেদ ভুলে সম্মিলিত উদ্যোগে এই সফরকে সাফল্যমন্ডিত করতে হবে। তা না হলে লাভবান হবে জামায়াত-শিবির।
“আগের মতই সর্বজনীন সংবর্ধনা কমিটি হবে। আহবায়ক, সদস্য সচিব এবং প্রধান সমন্বয়কারী নিয়োগ করা হবে। সকল দলের প্রতিনিধিত্ব থাকবেন এ কমিটিতে।’
এরপর সুনির্দিষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয় সংবর্ধনার প্রস্তুতি সভা।
হট্টগোলের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিক বলেন, “মিঠুকে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। তার সাধারণ সদস্য পদ কেড়ে নেয়া হয়নি।”
অন্যদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের সভাপতি মিসবাহ আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা আকতার আহমেদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য-সচিব নুরুজ্জামান সর্দার, নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য যুবলীগের সভাপতি সেবুল মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র জাসদের সভাপতি আব্দুল মোসাব্বির, আওয়ামী লীগ নেতা হাজী নিজাম এবং যুবলীগ নেতা জামাল আহমেদ সভায় বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button