সিলেট থেকে ডিজিটালাইজড পদ্ধতিতে বিচার কার্যক্রম শুরু

গতকাল বুধবার দুপুরে সিলেটের আদালত থেকে বিচার বিভাগ ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ডিজিটালাইজড উইটনেস ডিপোজিশন সিস্টেম শীর্ষক এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এস কে) সিনহা।
সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে জেলা ও দায়রা জজ মনির আহমদ পাটোয়ারির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এমপি, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এমপি, সুপ্রীম  কোর্টের আপীল বিভাগের বিজ্ঞ বিচারপতি ইমান আলী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমদ পলক এবং ইউএনডিপি’র আবাসিক প্রতিনিধি রবার্ট ওয়াটকিনস।
প্রধান বিচারপতি আরো বলেন, ঔপনিবেশিক আমলের আইন দিয়ে আমাদের দেশে এখনো বিচার কার্যক্রম চলছে। বিচার বিভাগ ডিজিটালাইজেশনের পাশাপাশি যুগোপযোগী আইন প্রয়োগেরও তাগিদ দেন তিনি। তিনি বলেন, আজ সিলেট থেকে ডিজিটাল প্রক্রিয়া শুরু হলো। পর্যায়ক্রমে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও খুলনাসহ অন্যান্য বিভাগীয় শহরে এ পদ্ধতি চালু করা হবে।
প্রধান বিচারপতি বলেন, আমাদের দেশের মিডিয়া আজকে যথেষ্ট স্বাধীনতা লাভ করেছে। আজকে মিডিয়াতে রাতে টকশোসহ অন্য আলোচনা হয়। কিছু কিছু প্রিন্ট মিডিয়াতে বিচার বিভাগ নিয়ে আলোচনা হয়। সবাইকে বলতে চাই যে, আমাদের মিডিয়া বা আমাদের লিবার্টি আছে। বেশী স্বাধীনতা (লিবার্টি) বাংলাদেশ কিংবা বিশ্বের কোন দেশের জনগণের জন্যই মঙ্গল বয়ে আনে না। তিনি সংবিধানের আর্টিকেল ঊনচল্লিশের কথা উল্লেখ করে বলেন, এটা একেবারে আনলিমিটেড লিবার্টি দেয়নি। লিবার্টির একটি সীমাবদ্ধতা থাকা উচিত।
কিন্তু, লিবার্টির সাথে আইনের সংযোগ আছে-জাস্টিসের সম্পর্ক আছে। এই লিবার্টির সাথে জনসাধারণের কমনগোলের সম্পর্ক আছে।
দেশের আদালতসমূহে মামলা জটের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, উচ্চ আদালতে বর্তমানে শতকরা ৬০ ভাগ মামলা রয়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষকদের এমপিওভুক্তি, ফিশারিজ এবং বালু মহাল নিয়ে। এসব বিষয়ে যুগোপযোগী আইন প্রণয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, এ সংক্রান্ত মামলার কারণে জনগণের অধিকার সংক্রান্ত মামলা নিষ্পত্তি করা যাচ্ছে না। তবে, বিচার সংস্কারে বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত এক বছরে শতকরা ১০৭ শতাংশ, হাইকোর্টে ১২০ শতাংশ এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা নিষ্পত্তির হার ১৮২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সুপ্রীম কোর্টে বছরে ৮৪দিন ছুটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ছুটি কমানো প্রয়োজন। কিন্তু, এটা কেউ সমর্থন করছে না।
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এমপি বলেন, সকলে যেন বিচার পায়-এটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে মানুষের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে। তিনি বলেন, আমরা অচিরেই সারা দেশকে ই-জাস্টিস সিস্টেমে নিয়ে যেতে চাই। ২০১৮ সালের পর দেশে বিদ্যুতের কোন ঘাটতি থাকবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, এটা দেশে বিচার বিভাগে ডিজিটালাইজেশনের নতুন প্রক্রিয়া। এর মাধ্যমে সময়, শ্রম ও খরচ সাশ্রয় হবে। পাশাপাশি বিচার কার্যক্রমেও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সিলেট পিপি এডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জিপি খাদেমুল মিল্লাত জালাল, জেলা বারের সভাপতি একেএম শমিউল আলম ও সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button