দেশে ফিরে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে গেলেন গভর্নর
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি কেলেঙ্কারির মধ্যেই দেশে ফিরে বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকে সু-কৌশলে এড়িয়ে গেলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান।
সোমবার বিকাল ৪টায় ভারত থেকে একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরেন ড. আতিউর রহমান। কিন্তু বিমানবন্দরে নেমে ভিআইপি টার্মিনাল থেকে সাংবাদিকদের এড়িয়ে তড়িঘড়ি করে কালো কাচে ঢাকা গাড়িতে করে বেরিয়ে যান তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রায় ৮ কোটি দশ লাখ ডলার চুরি যাওয়ার পরও দেশে না থাকার কারণে এতদিন গণমাধ্যমের সামনে আসেননি তিনি। কিন্তু সোমবার বিকালে তার দেশে ফেরার খবর পেয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবস্থান নেন গণমাধ্যম কর্মীরা।
তবে বিমানবন্দরে কথা বলবেন না বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ এফ এম আসাদুজ্জামানের মাধ্যমে সংবাদ কর্মীদের জানিয়ে দেন বিবি গভর্নর।
এ এফ এম আসাদুজ্জামান সংবাদ কর্মীদের বলেন, স্যার কোনো বিষয়ে এই মুহূর্তে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলবেন না বলে জানিয়েছেন।
পরে বিকাল ৪টা ২৫ মিনিটে হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ভিআইপি গেট দিয়ে কালো কাচের কালো রংয়ের একটি গাড়িতে করে বের হয়ে যান ড. আতিউর রহমান।
এ সময় সংবাদকর্মীরা ড. আতিউর রহমানের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি গাড়ি থামাননি।
অথচ গণমাধ্যমের সাথে সব সময়ই সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ছিলো বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের। অতীতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হতে কখনই সঙ্কুচিত হতেন না তিনি। এ পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমকে এড়িয়ে কালো কাচের গাড়িতে গা ঢাকা দিয়ে তাড়াহুড়ো করে বিমানবন্দর থেকে তার বেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা গণমাধ্যম কর্মীদের মধ্যে মুখরোচক আলোচনার জন্ম দেয়। গভর্নর ড. আতিউর রহমানের এমন আচরণে যেন কিছুটা ধাক্কাই খান গণমাধ্যম কর্মীরা।
সমপ্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে অবস্থিত বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে ১০০ মিলিয়ন ডলার বা প্রায় ৮০০ কোটি টাকা চুরি হয়েছে। পরে জানা যায়, এর মধ্যে ৮১ মিলিয়ন ডলার ফিলিপাইনের আরবিসি ব্যাংকের একটি শাখার ৫টি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তরিত হয়েছে। এ অর্থ পরে ফিলিপাইনের তিনটি ক্যাসিনো হয়ে হংকং-এ চলে গেছে।
বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম বড় এ ব্যাংক চুরির ঘটনা তদন্ত করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তদন্তে সহায়তা করছে সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ইনফরম্যাটিঙ ও ফায়ারআই। সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে এফবিআই ও মার্কিন বিচার বিভাগ।