সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের ভোট জালিয়াতির প্রমাণ মেলেনি
লন্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটসের সাবেক নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ তদন্ত থেকে সরে এসেছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। ভোট জালিয়াতিসহ নানান অভিযোগে গত বছরের এপ্রিলে সাবেক মেয়রকে ইলেকশন কোর্টে দোষী সাব্যস্ত করার প্রায় ১২ মাস পরে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড বুধবার তাদের ওয়েবসাইটে এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। কোর্টের প্রায় ২শ’ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশের পর ভোট জালিয়াতির সব অভিযোগ নিয়ে তদন্ত শুরু করেছিল মেট পুলিশের স্পেশাল ইনকোয়ারি টিম। দীর্ঘ প্রায় ১২ মাস তদন্ত শেষে উত্থাপিত অভিযোগগুলো ক্রিমিনাল অফেন্স হিসাবে গণ্য করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ মিলেনি বলে জানিয়েছে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড। এছাড়া কোর্টের জজ ইলেকশন পিটিশন শুনানির সময় তদন্তের জন্য কোন তথ্য-উপাত্ত রেফার করেননি বলেও মেট পুলিশের বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়। ক্রাউন প্রসিকিউশনের সঙ্গে পূর্ণ আলোচনা সাপেক্ষেই মেট পুলিশ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এদিকে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন টাওয়ার হ্যামলেটসের টোরি লিডার কাউন্সিলর পিটার্স গোল্ড। সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারাকে তিনি পুলিশের ব্যর্থতা বলে উল্লেখ করে এর জন্যে পুলিশকে লজ্জিত হওয়া উচিত বলে মনে করেন।
তবে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ড বলেছে, মেট পুলিশ নির্বাচনে জালিয়াতি কিংবা যে কোন অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়ে থাকে। পুলিশ অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে নির্বাচন কমিশন, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করবে যাতে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বকীতায় বজায় থাকে। এদিকে টাওয়ার হ্যামলেটস এর একজন মুখপাত্র বলেছেন, জালিয়াতির অভিযোগগুলো অত্যন্ত স্বাধীনতাভাবে নিরপেক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ওদিকে স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের সিদ্ধান্তে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাবেক নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। জনগণের ভালোবাসায় সততার জয় হবেই বলে উল্লেখ করে তার পাশে থাকার জন্য বারার সাধারণ জনগণ এবং শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, টাওয়ার হ্যামলেটসের প্রথম নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান ২০১৪ সালে দ্বিতীয় দফায় মেয়র নির্বাচীত হবার পর ভোট জালিয়াতিসহ নানান অভিযোগে বারার ৪ জন ভোটার হাইকোর্টে পিটিশন দাখিল করেন। এ পিটিশনের ভিত্তিতে গত বছরের ২৩শে এপ্রিলে কোর্টের চূড়ান্ত রায়ে মেয়র লুৎফুর রহমান এবং কাউন্সিলর আলিবর চৌধুরীকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। বাতিল করা হয় ২০১৪ সালের মেয়র নির্বাচনের ফলাফল। এছাড়াও মেয়রকে ৫ বছরের জন্য নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা এবং আর্থিক জরিমানা করা হয়। কোর্টের রায়ের পর জুন মাসে অনুষ্ঠিত হয় পরবর্তী মেয়র নির্বাচন। এ নির্বাচনে লেবার প্রার্থী জন বিগস মেয়র নির্বাচিত হন।