টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিল টাইগাররা
ভারতের কাছে মাত্র এক রানে হেরে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জয়ের মিশন থেকে বিদায় নিল টাইগাররা। মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের আত্মঘাতী ব্যাটিংয়ে শেষ পর্যন্ত হার মেনে নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় মাশরাফি বাহিনীকে। ফলে এক ম্যাচ হাতে রেখে বিশ্বকাপ মিশন শেষ হলো বংলাদেশের।
৩ বলে ২ রানই করতে পারল না বাংলাদেশ! শেষ তিন বলে তিন উইকেট হারিয়ে ১৪৫ রানেই আটকে গেল টাইগারদের ইনিংস।
প্রথম দুই ওভারে ভারতীয় পেসারদের ভালোভাবে সামলান তামিম ইকবাল। তবে তৃতীয় ওভারে অশ্বিনের দ্বিতীয় বলে উঠিয়ে মারতে গিয়ে উইকেট বিলিয়ে আসেন মিথুন। লং অনে ক্যাচে পরিণত হন ১ রান করা মিথুন। এরপর ফিরে যেতে পারতেন তামিমও। তবে ব্যাক্তিগত ১৬ রানে বুমরাহর হাতে জীবন পান তামিম। তবে এরপরই উইকেটের চারপাশে চার-ছয়ের ফুলঝুঁড়ি ছোটান তামিম-সাব্বির জুটি। ভারতীয় বোলারদের অসহায় করে তোলেন এই দুজন। এই জুটি বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে ৩২ বলে ৪৪ রান যোগ করেন।
তবে এক পর্যায়ে অধৈর্য্য হয়ে পড়েন তামিম। রবীন্দ্র জাদেজার বলে এগিয়ে এসে বলের লাইন মিস করেন। তবে স্টাম্পিংয়ের সহজ সুযোগ মিস করেননি ধোনি। বাংলাদেশের রান তখন ৫৫।
নবম ওভারে আউট হয়ে ফিরে আসেন সাব্বির। রায়নার বলে ধোনির স্টাম্পিংয়ের শিকার হন তিনি। আউট হবার আগে ১৫ বলে ২৬ রান করেন সাব্বির। নিজেকে প্রমোশন দিয়ে ব্যাটিংয়ে নামেন অধিনায়ক মাশরাফি। ছক্কা মেরে নিজের ইনিংস শুরু করলেও বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি টাইগার দলপতি।
১২তম ওভারে জাদেজার বলে বোল্ড হবার আগে ৬ রান করেন ম্যাশ। ১৩তম ওভারে বাংলাদেশের বিপদ বাড়ান সাকিব আল হাসান। অশ্বিনের বলে স্লিপে রায়নার ক্যাচে পরিণত হবার আগে মাত্র ১৫ বলে ২২ রান করেন সাকিব।
তবে মাহমুদউল্লাহ-সৌম্য জুটিতে ভালোভাবে জয়ের দিকে এর এগুতে থাকে বাংলাদেশ। শেষ ওভারে বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১১ রান। দ্বিতীয় ও তৃতীয় বলে দুটি চার মেরে বাংলাদেশের জয় যখন প্রায় নিশ্চিত ঠিক তখনই পরপর দুই বলে আউট হয়ে ফিরে আসেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিল ২ রান। তবে সেই বলে রান আউট হয়ে ফিরে আসেন শুভাগত।
এর আগে টস হেরে ব্যাঙ্গালুরুতে ১৪৬ রান করে ধোনির দল। ভারতের পক্ষে সবোর্চ্চ ৩০ রান করেন সুরেশ রায়না। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে কোনোভাবেই বাংলাদেশের বোলারদের সামনে সুবিধা করতে পারেনি ভারতের দুই ওপেনার রোহিত শর্মা ও শিখর ধাওয়ান। প্রথম ৫ ওভারে মাত্র ২৭ রান তুলতে সক্ষম হয় ভারত।
তবে ষষ্ঠ ওভারের শুরুতেই চড়াও হতে শুরু করেন রোহিত ধাওয়ান। মুস্তাফিজকে ২টি ছক্কা মেরে স্কোরটাকে বাড়িয়ে নিয়েছিলেন তবে সেই ওভারের শেষ বলেই উঠিয়ে মারতে গিয়ে সাব্বিরের বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন রোহিত শর্মা। ভারতের রান তখন ৪২।
১৬ বলে ১৮ রান করেন রোহিত। পরের ওভারের শেষ বলে আবার উইকেট হারায় ভারত। সাকিবের বলে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন শিখর ধাওয়ান। আউট হবার আগে ২২ বলে ২৩ রান করেন ধাওয়ান। এরপর রায়না-কোহলি ভালো ব্যাটিং করতে থাকলেও রান নিতে বেশ লড়াই করতে হয় এই দুই ব্যাটসম্যানকে। শেষ অধৈর্য হয়ে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন কোহলি। ১৪তম ওভারে শুভাগতের বলে বোল্ড হবার আগে ২৪ বলে ২৪ রান করেন কোহলি।
এরপর ১৬তম ওভারের প্রথম বলে ফিরে যান সুরেশ রায়নাও। ২৩ বলে ৩০ রান করে সাব্বিরকে ক্যাচ দেন রায়না। তবে এরপরের বলেই অসাধারন একটি ক্যাচ ধরে হার্দিক পাণ্ডিয়াকে প্যাভিলিয়নে পাঠান সৌম্য সরকার। উইকেটে এসে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি যুবরাজ সিংও। মাহমুদউল্লাহর বলে আল আমিনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে আসেন যুবি। মাত্র ৩ রান করেন তিনি। শেষের দিক ধোনি বেশ কয়েকটি চার মারলে স্বগতিকদের রান টেনেটুনে দেড়শোর কাছাকাছি পৌঁছায়।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ মিথুন, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, শুভাগত হোম, মাশরাফি বিন মর্তুজা, আল আমিন হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান।
ভারত দল: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, বিরাট কোহলি, সুরেশ রায়না, যুবরাজ সিংহ, মহেন্দ্র সিং ধোনি, হার্দিক পান্ডিয়া, ররীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, জাসপ্রিত বুমরাহ ও আশিষ নেহরা।