লোহিত সাগরের ওপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা সৌদি আরবের
মিশরের সাথে যোগাযোগ সহজ করতে লোহিত সাগরের উপর দিয়ে একটি সেতু তৈরির পরিকল্পনা করছে সৌদি আরব। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন সৌদী বাদশাহ সালমান। সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ৩০ মাইল।
মিসর সফরে এসে গত শুক্রবার এক বিবৃতিতে সেতু নির্মাণের এই ঘোষণা দিয়েছেন সৌদী বাদশাহ সালমান। আর মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ঘোষণা দিয়েছেন, সেতুটির নাম হবে সৌদী বাদশাহের নামে। সেতুটি দুই দেশের বাণিজ্যে গতি আনবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাদশাহ বলেন, আমি ও আমার ভাই মাননীয় প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ আল সিসির সাথে দুই দেশের মধ্যে একটি সেতু নির্মাণের বিষয়ে একমত।
বরাবরই সৌদি আরব মিশরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত। ২০১৩ সালে মিশরের ক্ষমতা বদলের পর সৌদি আরব আর মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো মিশরে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছে। বাদশাহ আরো বলেন, আফ্রিকা ও এশিয়া এই দুই দেশকে সংযুক্ত করার এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ এমন একটি যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে, যা দুই মহাদেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিকে নজিরবিহীন পর্যায়ে নিয়ে যাবে।
বিশেষ করে শিয়া প্রভাব মোকাবিলায় ওই অঞ্চলে সুন্নী প্রধান দেশগুলোকে নিয়ে যে জোট করার চেষ্টা করছে সৌদি আরব, মিশর সেখানে তাদের সহযোগী বলে তারা মনে করে।
সিরিয়ার বাশার আল আসাদ প্রসঙ্গে মিশরের নীরবতা আর ইয়েমেনে সৌদী হামলায় সমর্থন নিয়ে দুই দেশের মধ্যে কিছুটা দূরত্বও তৈরি হয়েছে। কিন্তু মিশরের কাছ থেকে আরো সমর্থন চায় সৌদি আরব।
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি বরছেন, “এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপের মাধ্যমে শুধু দুইটি দেশটি নয়, দুইটি মহাদেশ, এশিয়া আর আফ্রিকাও যুক্ত হবে। আরবদের যৌথ উদ্যোগের পথে এটি একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।”
বিস্তারিত কোন তথ্য এখনো জানানো না হলেও, সেতুটি বানাতে চার বিলিয়ন ডলার খরচ হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগের পরিকল্পনাগুলোতে সেতুটি নির্মাণে তিন থেকে চার বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় হবে বলে হিসেব করা হয়েছিল।
এর আগেও অবশ্য লোহিত সাগরের উপর দিয়ে একাধিকবার সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বাস্তবতার কারণে সেসব উদ্যোগ আলোর মুখ দেখেনি।
সৌদি বাদশাহের পাঁচদিনের এই সফরে দুই দেশের মধ্যে আরো কয়েকটি বাণিজ্যিক ও সহযোগিতামূলক চুক্তির ঘোষণা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে গণঅসন্তোষের সুযোগ নিয়ে মিশরের নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করেন তৎকালীন সেনা প্রধান ও বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিসি।