তুর্কী-সউদী সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে

Erduganইসলামী সম্মেলন সংস্থার (ওআইসি) শীর্ষ সম্মেলনের আগে সউদী আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজের আঙ্কারা সফরে দু’দেশের মধ্যেকার ইতিবাচক সম্পর্ক এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তুর্কী প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান ১৪ থেকে ১৫ এপ্রিল ইস্তাম্বুলে ওআইসির এই সম্মেলনের আয়োজন করছেন।
মিডল ইস্ট এন্ড আফ্রিকান রিসার্চার্স এসোসিয়েশনের চেয়ারপার্সন প্রফেসর জাকারিয়া কুরসুন বার্তা সংস্থার সঙ্গে আলাপকালে বলেন, শীর্ষ সম্মেলনের আগে সউদী বাদশাহ’র এই সফর খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি বলেন, মিসরের পর তুরস্কে বাদশাহ সালমানের এই সফর আঙ্কারা ও কায়রো’র মধ্যে মধ্যস্থতায় সউদী আরবের সামর্থের মূল্যায়ন হিসেবেও দেখা যেতে পারে। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার গুরুত্ব সম্পর্কে তুরস্ক ও মিসর উভয়েরই উপলব্ধি রয়েছে। জাকারিয়া কুনসুন বলেন, ‘আমি মনে করি সউদী আরব এক্ষেত্রে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে।’
সাকারিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যপ্রাচ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্রফেসর কামাল ইনাত বলেন, তুরস্ক মিসরের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণের সময় তার নীতির মূল অক্ষ পরিবর্তন করতে চায় না। তিনি বলেন, আমি মনে করি, মিসরে ক্ষমতাচ্যূত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুসরির কারাদন্ড ও মৃত্যুদনন্ড পরিবর্তন না করলে এবং মুসলিম ব্রাদারহুডকে রাজনীতি করার সুযোগ দেওয়া না হলে কায়রোর সঙ্গে আঙ্কারার সম্পর্ক নির্ধারণ করা সম্ভব নয়।
ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক থিংকিং’র চেয়ারম্যান প্রফেসর বিরোল আকগুন বলেন, দুই দেশ ভিন্নতর সরকার দ্বারা চালিত হলেও অর্থনীতি ও রাজনীতিতে তারা একটি ভালো সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।
ফাউন্ডেশন ফর পলিটিক্যাল, ইকনোমিক এন্ড সোস্যাল রিসার্চ’র (এসইটিএ) বিশেষজ্ঞ মুহিত্তিন আতামান বলেন, আমরা জানি তুরস্ক ও মিসরের মধ্যে গুরুতর সমস্যা রয়েছে। সমস্যাগুলো হালকা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাদশাহ মনে করেন যে, ওআইসি সম্মেলনের এই উপলক্ষের মধ্য দিয়ে তুরস্ক ও মিসরের সম্পর্কের উন্নয়ন হতে পারে। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান রাজধানী আঙ্কারায় এক অনুষ্ঠানে সউদী বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজকে ‘অর্ডার অব দ্য স্টেট অব রিপাবলিক অব টার্কি’তে ভূষিত করেছেন।
এরদোগান আঙ্কারায় তার প্রেসিডেন্সিয়াল প্রাসাদে সউদী বাদশাহকে আন্তরিক অভ্যর্থনা জানিয়ে আঙ্কারা-রিয়াদ সম্পর্কের ক্রমবর্ধমান গুরুত্বের উপর জোর দেন। দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিদেশি কোনো নাগরিককে তুর্কী প্রেসিডেন্টের দেওয়া এটা সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদক।
তুরস্ক সফররত বাদশাহ সালমান বলেন, এই সম্মান ব্যক্তির নয় বরং এটা সউদী আরবের জন্য। প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে এসে পৌঁছালে সউদী বাদশাহকে ২১ বার তোপধ্বনীসহ বিশেষভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়। বাদশাহ সালমানের নেতৃত্বে সউদী আরব এরদোগানের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। উভয় দেশ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ করে সিরিয় সংঘাতে অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। আঙ্কারায় বাদশাহ সালমান এবং প্রেসিডেন্ট এরদোগান বৈঠকে মিলিত হন। তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। আলোচনায় অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় স্থান পায়। তারা নিরাপত্তা, বাণিজ্য, অর্থনীতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চলমান সহযোগিতা পর্যালোচনা করেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button