সরকারি ব্যাংকের এক-পঞ্চমাংশ ঋণই ফেরত আসে না

শীর্ষস্থানীয় একটি আন্তর্জাতিক রেটিং সংস্থা বলেছে, বাংলাদেশের সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো যে ঋণ দেয় তার ২১ ভাগই আদায় হয় না।
মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে নিউইয়র্ক ভিত্তিক ফিচ রেটিং বলেছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিক পর্যন্ত সামগ্রিকভাবে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের হার ৮.৮ শতাংশ হলেও সরকারি সরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে এই ২১.৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংকের নেতৃত্ব সম্প্রতি যে পরিবর্তন এসেছে তা ব্যাংকিং খাতের নীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
সংস্থাটি বলছে, চলতি এবং আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশ সরকার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে তা অর্জিত হবে না।
ফিচের পূর্বাভাস হচ্ছে, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশে ৬.৭ শতাংশ এবং আগামী অর্থবছরে ৬.৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হতে পারে যেখানে সরকারের টার্গেট যথাক্রমে ৭.১% এবং ৭.২%।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশের এই উচ্চ প্রবৃদ্ধির কারণ সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির কারণে ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং গত জানুয়ারিতে ঘোষিত শিথিল মুদ্রানীতি।
তবে মূল্যস্ফীতিও তুলনামূলক বেশি- চলতি অর্থবছরের প্রথম আটমাসে যা ছিল ৬.১ শতাংশ।
সংস্থাটি বলছে, ২০১৫ সালের রাজনৈতিক সহিংসতার পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলনামূলক শান্ত থাকাটা ইতিবাচক। তবে তাৎপর্যপূর্ণ রাজনৈতিক ঝুঁকি রয়েই গিয়েছে। অব্যাহত রাজনৈতিক মেরুকরণ আবার ব্যাপক সহিংসতা এ অবরোধের জন্ম দিতে পারে। বিশেষ করে এটা ঘটতে পারে ২০১৯ সালের জানুয়ারির নির্বাচনের আগে।
ফিচ বলছে, রাজনৈতিক সংঘাত এবং সন্ত্রাসবাদ অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি করতে পারে। কারণ এত বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বাধাগ্রস্ত হতে পারে এবং বিশেষভাবে তৈরি পোশাকের ক্রেতারা বাংলাদেশে ব্যবসায় আগ্রহ হারাতে পারেন।
সংস্থাটি বলছে, বাংলাদেশে ব্যবসা করা কঠিন। বিশ্বব্যাংকের ব্যবসায় সহায়ক দেশের তালিকায় ১৮৯টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৪ তম।
সংস্থাটি বলছে, ১২৯১ মার্কিন ডলার মাথাপিছু আয় নিয়ে বাংলাদেশ গত বছরের জুলাই মাসে বিশ্বব্যাংকের নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা লাভ করলেও এটা তালিকার গড় মাথাপিছু আয় ৪০৮৭ ডলার থেকে অনেক নীচে।
ফিচ রেটিং বলছে, বাংলাদেশে সরকারের রাজস্ব আয় বিশ্বে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন। জিডিপির মাত্র ৮.৯ শতাংশ আয় নিয়ে বাংলাদেশ নাইজেরিয়ার পরেই অবস্থান করছে। এতে অত্যাবশ্যকীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাহত হচ্ছে।  তবে সরকার চলতি বছরের মাঝামাঝি থেকে নতুন যে ভ্যাট ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে যাচ্ছে তাতে রাজস্ব আয় বাড়তে পারে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button