চীনের ‘মুসলিম থিমপার্ক’
চীনের রাজধানী বেইজিং থেকে ৬০০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত ইনচুয়ান শহরটি চীনা হুই মুসলিম শাসিত নিংজিয়া প্রদেশের রাজধানী। শহরটিকে ‘বিশ্ব মুসলিম শহরে’ রূপ দেয়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে চীনের কম্যুনিস্ট সরকার।এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রায় ৩৫০ কোটি ডলার ব্যয়ে শহরটিতে মসজিদ সদৃশ রাজকীয় ভবন, আরবি অক্ষরে লিখিত পথ নির্দেশিকা এবং এক হাজার এক আরব্য রজনীর অনুকরণে আলোকসজ্জা ও ডান্স শো পরিবেশিত থিম পার্ক নির্মাণ করছে চীন। আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের বৃহত্তর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে চীনা-আরব ইতিহাস ও সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে এই থিম পার্কটি তৈরি করছে চীন সরকার। দেশটির মুসলিম নাগরিকদের ওপর চালানো দমন-পীড়নের জন্য বরাবরই চীন সমালোচিত হয়ে আসছে। বিশেষ করে জিনজিয়াং প্রদেশে বসবাসরত তুর্কি ভাষী উইঘুর মুসলিমরা চীনা সরকারের ব্যাপক নির্যাতনের শিকার। ইসলামবিদ্বেষী বদনাম ঘোচাতে এবার নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে দেশটির সরকার। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে চীনে ইসলামের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তুলে ধরার জন্য ব্যাপক বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেইজিং। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং গত জানুয়ারিতে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে তার দেশের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য একটি ‘শ্বেতপত্র’ প্রকাশ করেছেন। তবে লক্ষণীয় বিষয় হল, চীনা নেতারা উইঘুর মুসলিম ভূখণ্ডে এই থিমপার্ক নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি। হুই মুসলিমরা উইঘুরদের মতো তুর্কি ভাষী নয়, তারা সাধারণত মান্দারিন ভাষী এবং জাতিগতভাবে সংখ্যাগুরু হান বৌদ্ধদের ঘনিষ্ঠ। এ কারণে হুইরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বা পুলিশি নির্যাতনের শিকার কম হয়। হুই অধ্যুষিত ইনচুয়ানে থিম পার্ক নির্মাণ করে চীনা নেতারা সরকার অনুমোদিত চীনা ভার্সন ইসলামের দিকে বিশ্বের দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। আর তাই হাজার বছর ধরে শোষিত-নির্যাতিত একটি জাতিকে কৃত্রিম স্থাপনা দ্বারা মুড়িয়ে নবরূপ দেয়ার চেষ্টায় লিপ্ত চীনের কম্যুনিস্ট সরকার।