বুলগেরীয় উদ্যোক্তাদের প্রতি বাংলাদেশে বিনিয়োগ আহ্বান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই দেশের পারস্পরিক স্বার্থে কৃষি, জ্বালানি, আইসিটি, সমুদ্র ও পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে বুলগেরিয়ার বিনিয়োগ কামনা করেছেন। তিনি বলেন, উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার মাধ্যমে আমরা দেশে একটি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করেছি। কৃষি, জ্বালানি, আইসিটি, সমুদ্র এবং পর্যটনসহ বিভিন্ন খাতে ব্যাপক আকারে বিনিয়োগের মাধ্যমে আপনারা এ সুযোগ-সুবিধাকে কাজে লাগাতে পারেন।
বুলগেরিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার সকালে সোফিয়ার হোটেল মেরিনিলার দ্বিপক্ষীয় সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ অনুরোধ করেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের অবহিত করেন।
প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে বিনিয়োগ আকর্ষণে তার সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের বর্ণনা দিয়ে বলেন, গত ৭ বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার ২শ’ মেগাওয়াট থেকে ১৪ হাজার ৭শ’ মেগাওয়াটে বৃদ্ধি করা হয়েছে। তিনি বলেন, এখন আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়া। আমরা এখন প্রত্যন্ত এলাকায় সোলার প্যানেল স্থাপন করছি। তিনি বলেন, দেশে বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে একশ’ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ও আইটি পার্ক স্থাপন প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। কৃষি প্রক্রিয়াকরণ খাতের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বুলগেরিয়ার উদ্যোক্তারা এ খাতেও বিনিয়োগ করতে পারেন।
সমুদ্র খাতের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে এরই মধ্যে সমুদ্রসীমা বিরোধ সমাধান করা হয়েছে। দেশব্যাপী ৫ হাজার ৫শ’ ডিজিটাল সেন্টার স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইসিটি খাতেও বিপুল বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের সমন্বয়ে বিবিআইএন উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন। শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান বাজারকে সম্প্রসারণের মাধ্যমে এটি হবে এ অঞ্চলের আরেকটি বাজার। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় বুলগেরিয়ার সমর্থনের কথা গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, আমাদের হৃদয়ে বুলগেরিয়ার জন্য বিশেষ স্থান রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, বুলগেরিয়ার সর্বক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ দেখে তিনি আনন্দিত। এটিকে খুবই উৎসাহব্যঞ্জক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার সরকারও সর্বক্ষেত্রে নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধির জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বুলগেরিয়ার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বাংলাদেশের বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন এবং বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখান।
অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম মহিউদ্দিন এবং এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শফিকুল ইসলামও বক্তব্য রাখেন। উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব সুরাইয়া বেগম এবং বুলগেরিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত আল্লামা সিদ্দিকী।