যুক্তরাষ্ট্রে ফাস্টফুড শ্রমিকদের ধর্মঘট
ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, শিকাগো, ডেট্রয়েটসহ মোট ৬০টি শহরে ধর্মঘট করেছেন ফাস্টফুডের শ্রমিকেরা। ধর্মঘটের কারণে ম্যাক ডোনাল্ড, বার্গার কিং, উইন্ডিজ, টাকোবেলসহ প্রধান ফাস্টফুডের দোকানগুলো কার্যত অচল হয়ে পড়ে।
মূলত অভিবাসী ও কম বয়সী শ্রমিকদের ওপর ভিত্তি করে দেশটির ফাস্টফুড ব্যবসা চলে। দেশটির ফেডারেল নীতিমালা অনুযায়ী, বর্তমানে ফাস্টফুডের দোকানে কর্মরত শ্রমিকদের প্রতি ঘণ্টায় ন্যূনতম মজুরি সোয়া সাত ডলার। ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত মজুরি বাড়ানো হয়নি।
শ্রমিকদের দাবি, বর্তমানে তাঁরা যে মজুরি পান, এতে জীবনধারণ প্রায় অসম্ভব। তাই ন্যূনতম মজুরি বাড়িয়ে প্রতি ঘণ্টার ১৫ ডলার করার দাবি তুলেছেন তাঁরা। একই সঙ্গে মজুরির বিষয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে দরকষাকষির জন্য ট্রেড ইউনিয়ন করার অধিকার চেয়েছেন এসব শ্রমিক।
অধিকাংশ ফাস্টফুড দোকানে শ্রমিকদের খণ্ডকালীন কাজ দেওয়া হয়। এতে নিয়মিত কর্মচারীদের মতো এসব শ্রমিক কর্মক্ষেত্রে ছুটি, চিকিত্সা বিমা, অবকাশ সুবিধাসহ অন্যান্য সুবিধা থেকেও বঞ্চিত। তাই মজুরি বৃদ্ধির পাশাপাশি পূর্ণকালীন কাজের দাবি তুলেছেন আন্দোলনরত শ্রমিকেরা।
শ্রমিকদের অনুপস্থিতির কারণে গতকাল অধিকাংশ ফাস্টফুড দোকান বন্ধ থাকতে দেখা গেছে। কাজে বিরতি দিয়ে বিভিন্ন শহরের—ম্যাক ডোনাল্ড, কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন, বার্গার কিংয়ের মতো নামীদামি ফাস্টফুড রেস্তোরাঁর সামনে প্ল্যাকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন শ্রমিকেরা। নিউইয়র্ক থেকে ওকল্যান্ড পর্যন্ত বিক্ষোভ-মিছিল হয়েছে।
গতকাল শ্রমিকদের সমাবেশগুলোতে যোগ দিয়ে তাঁদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছেন স্থানীয় আইনপ্রণেতারা। এর আগে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির জন্য আইন প্রণয়ন করতে কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানান।
গত নভেম্বর মাস থেকে মজুরি বৃদ্ধির এ আন্দোলন শুরু হয়। বর্তমানে এটি দেশটির প্রায় সব শহরে ছড়িয়ে পড়েছে।
এদিকে ফাস্টফুড কোম্পানিগুলো বলছে, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো হলে তৈরি খাবারের দামও বেড়ে যাবে। এতে ব্যবসায় চাপ পড়বে। এর ফলে অনেক দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। অদক্ষ ও কম বয়সীদের জন্য কাজের সুযোগ কমে আসবে।