দেশে ‘মানুষ’ হওয়ার আন্দোলন শুরু হওয়া উচিৎ : ড. কামাল
দেশে একটা মানুষ হওয়ার আন্দোলন শুরু হওয়া উচিৎ বলে মন্তব্য করেছেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন।
গতকাল শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্রী সাবেকুন্নাহার সনির চতুর্দশ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। সনি মেমোরিয়াল ফাউন্ডেশন এই আলোচনা সভার আয়োজন করে।
আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, সোয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান খবির উদ্দিন খান, বুয়েটের কেমিকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক শওকত চৌধুরী, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহবুব হোসেন, অ্যাডভোকেট হাসান তারেক চৌধুরী প্রমুখ।
ড. কামাল হোসেন বলেন, হাইকোর্ট থেকে তথ্য পেয়ে আমি ছুটে গিয়েছিলাম বুয়েটে। তখনকার ভিসিও আসল ঘটনা তুলে ধরেন। তখন শিক্ষক-ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিক্রিয়া আমরা দেখেছি। এরপর এই ঘটনাটা মানুষের বিবেবকে নাড়া দিয়েছিল। যখনই এটা তুলে ধরা হয় তখন এটা নাড়া না দিয়ে পারে না।
তিনি বলেন, একটা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী কোনো ধরণের বিভেদের মধ্যে না থেকেও গুলিবিদ্ধ হলো, মারা গেল। কেন মারা গেল? কিছু তথাকথিত ছাত্রের হাতে চাঁদা তোলার প্রতিযোগিতায়। লোভকে সামলে রাখতে হয়। আমি লোভ করি বলে আর একজনের জিনিস জোর করে দখল করব এটা কোনোভাবে একটা সভ্য সমাজে হতে পারে না। অবৈধভাবে জোর করে ক্ষমতা প্রয়োগ করে সেটা দখল করব সেটা সভ্য সমাজে চলে না।
ড. কামাল হোসেন বলেন, সন্ত্রাসমুক্ত শিক্ষাঙ্গন গড়ার দাবিতে একটা আন্দোলন শুরু হয়েছে। জনমত যাচাই করে একজন লোকও পাওয়া যাবে না যে বলে, ‘আমরা সন্ত্রাস মুক্ত শিক্ষাঙ্গন চাই না’। যদি কাউকে পাওয়া যায় তাহলে বুঝতে হবে সে মানসিকভাবে অসুস্থ। তার মানসিক চিকিৎসার প্রয়োজন আছে।
তিনি বলেন, যে বা যারা সন্ত্রাস করার ব্যাপারে বাঁধা দিচ্ছে না এরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। নিজের ক্ষতি করছে। এরা না বুঝে নিজেকে অমানুষ বানাচ্ছে। এদের বোঝানোর চেষ্টা করতে হবে।
নিহত সনির পিতা হাবিবুর রহমান ভূইয়া বলেন, আমার কথার উত্তরের জন্য আরো অনেকদিন অপেক্ষা করতে হবে এটা জানি। তবে আমি হতাশ নই। একদিন দেশে সুদিন আসবে। আর কোনো সনি দুর্ভাগ্যের শিকার হবে না। আমরা যা করি তা বলি না, আর যা বলি তা করি না বলে তিনি মন্তব্য করেন।
উল্লেখ্য, ২০০২ সালের ৮ জুন বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের মেধাবী ছাত্রী সাবেকুন্নাহার সনি বিবাদমান দুই গ্রুপের গোলাগুলির মধ্যে পড়ে নিহত হন।