সিরিয়ায় হামলা প্রশ্নে বিকল্প ভাবছেন ওবামা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিরিয়ার কথিত রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের কিভাবে জবাব দেয়া যায় সে ব্যাপারে বৃহস্পতিবার রাতে তার বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে ভেবেছেন। মার্কিন আইন প্রণেতারা একথা জানান।
প্রতিনিধি পরিষদ ও সিনেটের ২৬ জন সদস্যের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগকারী কর্মকর্তাদের মধ্যে আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী চাক হেগেল রয়েছেন। একইভাবে ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকানরা জোর দিয়ে বলেন যে, ওবামার টিম সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাহিনীর বিরুদ্ধে সামরিক হামলার জন্য বিভিন্ন বিকল্পসহ এ বিষয়ে এগিয়ে যেতে আইন প্রণেতাদের সঙ্গে আরও আলোচনা করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। প্রেসিডেন্টের জাতীয় নিরাপত্তা টিম জানায়, এখনো সিরিয়া বিষয়ে তার বিভিন্ন বিকল্প নিয়ে চিন্তা করছেন এবং এব্যাপারে কংগ্রেসের সঙ্গে তিনি আলোচনা অব্যাহত রাখবেন। দীর্ঘ ৯০ মিনিট খোলাখুলি কথা বলার পর প্রতিনিধি পরিষদের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক কমিটির ডেমোক্রেট প্রতিনিধি ইলিয়ট এঞ্জেল একথা বলেন।
তিনি বলেন, সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের কাছে রাসায়নিক অস্ত্র যে ব্যবহার করা হয়েছে সে ব্যাপারে হোয়াইট হাউজের সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই এবং আসাদ সরকার উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহার করেছে। তিনি বলেন, মার্কিন প্রশাসন এ ব্যাপারে একমত যে, এ হামলার সঙ্গে জড়িতরা কোনোভাবেই ছাড় পেতে পারে না। ১৪০ জনের বেশি মার্কিন আইন প্রণেতা কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া কোনো সামরিক অভিযান শুরু করার ব্যাপারে ওবামার নির্বাহী ক্ষমতা ব্যবহারের ব্যাপারে আপত্তি ব্যক্ত করেছে।
তবে সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান রবার্ট মেনেন্দেজ জানান, সিরিয়ার জনগণকে রক্ষায় আমেরিকার সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে একটি পরিণত সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে বৃটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউজ অফ কমন্স-এর সদস্যরা সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের বিপক্ষে রায় দিয়েছে। সিরিয়ায় সামরিক পদক্ষেপের পক্ষে নীতিগত সমর্থনের প্রস্তাবের বিপক্ষে ২৮৫ ভোট পড়েছে। পক্ষে পড়েছে ২৭২ ভোট। বৃটিশ পার্লামেন্টে গ্রীষ্মকালীন ছুটির মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন এই বিশেষ অধিবেশনের ডাক দিয়েছিলেন। এই অধিবেশনের লক্ষ্য ছিল সিরিয়া প্রশ্নে সংসদে কোন নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া সম্ভব হয় কি না। তবে ভোটের এ ফল ডেভিড ক্যামেরনকে ধরাশায়ী করেছে, কারণ ক্যামেরন সিরিয়ায় সামরিক অভিযানের পক্ষে বেশ সক্রিয় ছিলেন।
বিবিসি জানায়, ডেভিড ক্যামেরন বলেন, “সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করে যে হামলা চালানো হয়েছে তার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়া খুবই প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। তবে এটা স্পষ্ট যে বৃটিশ পার্লামেন্ট কোনো ধরনের সামরিক অভিযান চায় না। বৃটিশ নাগরিকদের ভাবনাই এ রায়ে প্রতিফলিত হচ্ছে। আর তাই পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান রেখে সে অনুযায়ী কাজ করবে সরকার।” এই রায়ের মাধ্যমে সিরিয়ায় বৃটিশ সরকারের মার্কিন নেতৃত্বাধীন যেকোনো ধরনের আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি বাতিল হয়ে গেল। সন্দেহ নেই যে বৃটিশ পার্লামেন্টের এই রায় ক্যামেরনের নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন তুলবে এবং যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের জটিলতাও তৈরি হতে পারে।