ব্রিটিশ রাজনীতিতে ঝড়ের পূর্বাভাস
ব্রিটিশদের কাছে আগামী বৃহস্পতিবার একটি ঐতিহাসিক দিন। ব্রিটেন ইউরোপের সঙ্গেই থাকবে নাকি বেরিয়ে আসবে ব্রিটিশরা গণভোটে সে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন এদিন।
এই গণভোটের সঙ্গে মিশে গেছে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের রাজনৈতিক ভাগ্য। গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে রায় পড়লে, যাকে বলা হচ্ছে ব্রেক্সিট, ক্যামেরনকে ক্ষমতা ছাড়তে হতে পারে।
সাম্প্রতিক জনমত জরিপগুলো বলছে, ইউরোপ ও আমেরিকায় সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং শরণার্থী সংকটের কারণে ব্রেক্সিট জয়ী হতে পারে।
ফলে ক্যামেরনের ভাগ্যের পেন্ডুলাম কোন দিকে দোল দেয় তা জানার জন্য ২৩ জুন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
অবশ্য ফল কি হয় তা জানতে হলে স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। যদি এতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট পড়ে তাহলে তা সঙ্গে সঙ্গেই ঘটবে না। এ পর্যায়ে ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গেই অবস্থান করবে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। শুক্রবার সকালেই গণভোটের ফল স্পষ্ট হওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন একটি বিবৃতি দেবেন।
এরই মধ্যে ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে বেশি ভোট পড়লেও তিনি প্রধানমন্ত্রী পদ ত্যাগ করবেন না।
তবে অনেকে মনে করেন, এই গণভোটের মধ্য দিয়েই তার বিদায় ঘণ্টা বেজে যাবে- যদি ব্রিটিশরা ইউরোপীয় ইউনিয়নে অবস্থানের পক্ষে থাকার জন্য তার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন।
কিন্তু যদি ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে বেশি ভোট পড়ে বা ব্যবধান কম হয় তাহলে ক্যামেরনের জন্য একটি কঠিন পরিণতি নেমে আসতে পারে। পক্ষ বা বিপক্ষ যারাই বিজয়ী হোক না কেন তিনি দায়িত্বভার অব্যাহত রাখতে চান। কিন্তু অনেক রাজনৈতিক বোদ্ধা ও টোরি দলের কিছু এমপি মনে করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে ভোট বেশি পড়লে ক্যামেরনের ক্ষমতা অব্যাহত রাখা অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। সেক্ষেত্রে ক্যামেরন যদি ক্ষমতায় থাকতে চান তাহলে কমপক্ষে ৫০ জন এমপিকে দলীয় ১৯২২ সদস্যের কমিটির কাছে একটি লিখিত আবেদন করতে হবে নেতৃত্ব নিয়ে আস্থা ভোটের জন্য। এ ভোটে যদি ক্যামেরন টিকে যান তাহলে তার কপাল সুপ্রসন্ন। আর যদি তা না হয় তাহলে ইতি ঘটবে তার ক্ষমতার। এমন আস্থা ভোট হতে পারে আগামী বছর। এই প্রক্রিয়ায় ডেভিড ক্যামেরনের পূর্বসূরি ইয়ান ডানকান স্মিথের পতন ঘটেছিল।
কিন্তু অল্প সংখ্যক এমপি এরই মধ্যে বলেছেন যে, তারা ওই কাজটি অর্থাৎ লিখিত আবেদনটি করতে প্রস্তুত। যদি দলীয় অধিবেশনে আস্থার ভোট হয় এবং ক্যামেরন পরাজিত হন তাহলে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কনজার্ভেটিভ নেতৃত্ব নিয়ে শুরু হবে এক রকম লড়াই। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। ফলে ব্রেক্সিট জয়ী হলে ব্রিটিশ রাজনীতিতে কয়েক মাস ধরেই দমকা হাওয়া বইবে।