ব্রেক্সিট : জয়-পরাজয়ের সম্ভাবনা সমান সমান
আজকের দিন শেষেই বৃটিশদের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন সামনে। বৃহস্পতিবার গণভোটে তারা সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন বৃটেন ইউরোপিয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকবে কিনা। এই গণভোটের দিকে এখন তাকিয়ে আছে সারা বিশ্ব। বিশেষ করে এতে শুধু বৃটেনের ভাগ্যই নির্ধারিত হবে না। একই সঙ্গে ইউরোপিয় ইউনিয়নের পরিণতি কি হতে পারে, বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ভাগ্যে কি ঘটতে যাচ্ছে- তারও একটি সিদ্ধান্ত বেরিয়ে আসবে। কিন্তু জরিপ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গণভোটে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়া পক্ষ ‘লিভ’ ও ইউরোপিয় ইউনিয়নের সঙ্গে থাকার পক্ষ ‘রিমেইন’ প্রায় সমান সমান ভোট পেতে পারে। অর্থাৎ দু’পক্ষেরই সুযোগ ৫০-৫০।
এই গণভোটের আগে শেষ বক্তব্যে ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে দাঁড়িয়ে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জোরালো গলায় বলেছেন, ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে গেলে অর্থনীতিতে বড় ধরণের পতন দেখা দেকে। এর শিকার হবে বৃটেনের যুব সমাজ, শিশু কিশোর ও সেই সব শিশু যারা এখনও জন্ম নেয় নি। দুটি জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে লিভ ও রিমেইন পক্ষ সমান তালে এগিয়ে চলেছে। জরিপে তাদের ব্যবধান খুবই সামান্য। ইউগভ পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে লিভ পক্ষকে সমর্থন করছে শতকরা ৫১ ভাগ মানুষ। অন্যদিকে রিমেইন পক্ষ সমর্থন করছে শতকরা ৪৯ ভাগ মানুষ। তবে সারভেশন জরিপে দেখা গেছে রিমেইন শিবির শতকরা মাত্র এক ভাগ এগিয়ে আছে লিভ শিবির থেকে।
স্ট্রাচক্লাইডি ইউনিভার্সিটির রাজনীতি বিষয়ক প্রফেসর ও জরিপ বিশেষজ্ঞ জন কার্টিস বলেছেন, জয়-পরাজয়ের সম্ভাবনা ৫০-৫০। দীর্ঘ একটি ইতিহাসকে সংক্ষিপ্ত করে আনার ক্ষেত্রে নিঃসন্দেহে লিভ শিবির গত সপ্তাহে এগিয়ে ছিল। এটাই ছিল তাদের প্রচারণার প্রথম উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। তবে গণভোট হবে একেবারে মুখোমুখি। সমান পরিমাণ ভোট পেতে পারে উভয় পক্ষ। প্রচারণার শেষ সময়ে বৃটেনের তিনটি শীর্ষস্থানীয় নিরপেক্ষ অর্থনৈতিক সংস্থা একটি সতর্কতা দিয়েছে। তারা বলেছে, ব্রেক্সিটের ফলে বেতন বৃদ্ধি করতে হতে পারে। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাবে।
এ বিষয়ে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন ইন্সটিটিউট ফর ফিসক্যাল স্টাডিস, দ্য ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল রিসার্স এবং সেন্টার ফর ইকোনমিক পারফরমেন্সের পরিচালকরা। ভোটের ফল কি হবে তা নিয়ে দোদুল্যমানতার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বয়স্ক ভোটারদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, পোলিং বুথে গিয়ে শুধু পরবর্তী প্রজন্মের কথা চিন্তা করুন। তিনি বলেন, আমার প্রজন্ম ও প্রবীণ ভোটারদের কাছে আমি সরাসরি বক্তব্য রাখছি। আমি জানি ইউরোপ পুরোপুরি পারফেক্ট নন। আমাকে বিশ্বাস করুন। আমি ওইসব হতাশা বুঝতে পারছি। আমি নিজেকে অনুধাবন করতে পারছি। এ জন্যই আমরা আমাদের বিশেষ মর্যাদার জন্য সমঝোতার চেষ্টা করেছি।