রানির কাছ থেকে পুরস্কার নিলেন লুঙ্গি পরা বাংলাদেশী ওসামা
চিরায়ত বাঙালি পোশাক লুঙ্গি-পাঞ্জাবি, গলায় গামছা ও পায়ে স্যান্ডেল পরে ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে পুরস্কার নিলেন বাংলাদেশি তরুণ ওসামা বিন নূর। পুরস্কারের নাম ‘কুইন্স ইয়াং লিডারস অ্যাওয়ার্ডস’।
গত বৃহস্পতিবার লন্ডনের বাকিংহাম প্রাসাদে এক জমকালো অনুষ্ঠানে কমনওয়েলথভুক্ত ৪৫টি দেশ থেকে আসা উদীয়মান ৬০ তারুণ নেতৃত্বের হাতে এ পুরস্কার তুলে দেন রানি।
ওসামা একমাত্র বাংলাদেশি হিসেবে রানির ৯০তম জন্মদিন উপলক্ষে দেয়া এই অ্যাওয়ার্ড জেতেন।
বাংলাদেশের তরুণদের আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বৃত্তি, প্রশিক্ষণ, পুরস্কারসহ নানা সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে জানাতে ‘ইয়াং অপরচুনিটিজ’ নামে একটি পোর্টাল খুলেছেন ওসামা। তিনি এটির সহপ্রতিষ্ঠাতা। এ ছাড়া ভলান্টিয়ার ফর বাংলাদেশের সম্পদ সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করা ওসামা রেডিওতে তরুণদের জন্য তিন টেক্কা নামের একটি অনুষ্ঠানও সঞ্চালনা করেন।
ওসামা বিন নূর ব্রিটিশ রানির দেয়া অ্যাওয়ার্ড জিতে নেয়া ওসামার বাড়ি নরসিংদীর রায়পুরার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের সিরাজনগর নয়াচর গ্রামে। নূরুল ইসলাম ও আঁখি নূর বেগমের চার সন্তনের মধ্যে ওসামা দ্বিতীয়। এই তরুণ ঢাকার আপডেট ডেন্টাল কলেজের দন্তচিকিৎসা বিষয়ের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।
ওসামা বলেন, বাংলাদেশে অনেক অফিস, মার্কেট কিংবা রেস্তোরাঁয় মানুষকে লুঙ্গি পরে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এমনকি ঢাকার একটি এলাকায় লুঙ্গি নিষিদ্ধ করার চেষ্টা হয়েছে। এক কথায় লুঙ্গি পরা ব্যক্তিকে তাচ্ছিল্যের চোখে দেখা হয়। অথচ লুঙ্গি পরেননি এমন পুরুষ বাংলাদেশে পাওয়া যাবে না।
বাঙালি পরিচয়ের ধারক ঐতিহ্যবাহী এই পোশাকের প্রতি তাচ্ছিল্যপূর্ণ মনোভাব পরিবর্তন করার লক্ষ্যে ওসামা রানির অনুষ্ঠানে লুঙ্গি পরার সিদ্ধান্ত নেন। ওসামা বলেন, অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করতে গিয়ে দুবার রানির সঙ্গে হাত মেলানোর সুযোগ হয়েছে তাঁর। তিনি শুরুতে রানিকে এই অ্যাওয়ার্ড দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। জবাবে রানি জানতে চান, ওসামা কী করেন। নিজের কাজের বিবরণ দিলে রানি বলেন, ভালো কাজগুলো চালিয়ে যাও। তোমাদেরকেই আগামী বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে হবে। শুভকামনা। অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ শেষে আবার রানির সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিদায় নেন ওসামা।
বাকিংহাম প্যালেসে অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ ছাড়াও অ্যাওয়ার্ডস বিজয়ীরা লন্ডনে টুইটারের প্রধান কার্যালয়, বিবিসি একাডেমি, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়, কমনওয়েলথ কার্যালয়, অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মশালায় অংশ নেন। গতকাল ২৪ জুন শুক্রবার বারবিকিউ পার্টির মাধ্যমে এই তরুণ দলকে বিদায় জানানো হয়।