তাড়াতাড়ি ছেড়ে যাওয়ার জন্যে ব্রিটেনের ওপর চাপ
ব্রিটেন এক গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার পর তা নিয়ে ইউরোপজুড়ে এখনও তোলপাড় চলছে।
ইইউর প্রতিষ্ঠাকালীন ছয়টি দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ এক জরুরী বৈঠকে বসেছিলেন তাদের করণীয় ঠিক করতে।
সেখান থেকে তারা ব্রিটেনকে ইইউ ছাড়ার লক্ষ্যে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দিয়েছেন। অন্যদিকে স্কটল্যান্ডের মন্ত্রিপরিষদ আজ ব্রিটেন থেকে পৃথক হওয়ার লক্ষ্যে দ্বিতীয় এক গণভোটের আইনি প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গণভোটের দু’দিন পর জার্মানি, ফ্রান্স, ইটালি, বেলজিয়াম, লাক্সেমবার্গ ও নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আজ বার্লিনে এক আলোচনায় বসেছিলেন।
জরুরী এই বৈঠক থেকে ব্রিটেনের প্রতি আহবান জানানো হয়েছে, ইইউর সাথে আলোচনা যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব সেরে ফেলার জন্যে।
বৈঠক শেষে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রাঙ্ক ভাল্টার স্টাইনমায়ার বলেছেন, যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব এই প্রক্রিয়া শুরু করা উচিত। কারণ তাদেরকে ইউরোপের ভবিষ্যতের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
তবে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেলের কথা কিন্তু একটু ভিন্ন রকমের। আলাদা একটি অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, বেরিয়ে যাওয়ার জন্যে ব্রিটেনের তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই। আবার এই প্রক্রিয়া চিরকালের জন্যে চলতে থাকবে সেটাও নয়।
এক সংবাদ সম্মেলনে জার্মান চ্যান্সেলর বলেছেন, এর জন্যে বছরের পর বছর সময় নেওয়া উচিত নয়- এটা সত্য। আবার ব্রিটেনের জন্যে অল্পকিছু সময় বেধে দেওয়াও পক্ষে নন তিনি।
অন্যদিকে, ফরাসী পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ব্রিটিশ জনগণ তাদের রায় জানিয়ে দিয়েছে। সেকারণে এই বিষয়ে ‘ইঁদুর বিড়াল খেলার’ কোনো প্রয়োজন নেই।
এই পরিস্থিতিতেই ইইউর শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বুধবার। সেখানে অবশ্য ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন উপস্থিত থাকবেন না।
তার আগে মি. ক্যামেরন ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য দেশের নেতাদের সাথে আলাদা করে আলোচনায় বসবেন।
স্কটল্যান্ড প্রসঙ্গ
স্কটল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী নিকোলা স্টার্জন বলেছেন, ‘ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে স্কটল্যান্ডের অবস্থানকে রক্ষা করার জন্যে’ তিনি খুব শীঘ্রই ব্রাসেলসের সাথে আলোচনা শুরু করার উদ্যোগ নেবেন।
স্কটল্যান্ডের বেশিরভাগ মানুষই, ৬২ শতাংশ ভোটার, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছে।
নিকোলা স্টার্জন তার মন্ত্রীসভার সদস্যদের সাথে এক বৈঠকের পর বলেছেন, ইইউ ছেড়ে যাওয়ার জন্যে স্কটল্যান্ডকে জোর করা যাবে না।
এখন ব্রিটিশ জনগণের এই সিদ্ধান্তের পর স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে দ্বিতীয় আরেকটি গণভোট অনুষ্ঠিত হতে পারে কিনা- সেটা নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে।
মিস স্টার্জন বলেছেন, এরকম একটি গণভোটের ব্যাপারে আইন তৈরির প্রয়োজনীয়তার বিষয়ে তার মন্ত্রীসভার সদস্যরা একমত হয়েছেন।
তিনি বলেছেন, দ্বিতীয় আরেকটি গণভোটের সম্ভাবনা খুবই উজ্জ্বল। -বিবিসি বাংলা