ব্রেক্সিট : মারাত্মক লোকসানের মুখে ভার্জিন গ্রুপ
ব্রেক্সিট গণভোটের ফলে বৃটেনের শীর্ষ ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ভার্জিন গ্রুপ মারাত্মক লোকসানের মুখে পড়েছে। গ্রুপটির প্রতিষ্ঠানা রিচার্ড ব্রানসন বলেছেন, ব্রেক্সিটের ফলে তার কোম্পানি এক-তৃতীয়াংশ অর্থ হারিয়েছে। ৩০০০ মানুষের কর্মসংস্থান হতো এমন কাজের চুক্তি বাতিল করতে হয়েছে তাকে। ইউরোপ থেকে বৃটেনের বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে যে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধানে তিনি রাজনীতিবিদদের স্মার্টনেস দেখানো আহ্বান জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ভার্জিন গ্রুপ লিমিটেড বৃটেনের বহুজাতিক ব্রান্ডের ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠান। এর উদ্যোক্তা রিচার্ড ব্রানসন ও নিক পাওয়েল। ট্রাভেল, বিনোদন, লাইফস্টাইল, আর্থিক সেবা, পরিবহন, স্বাস্থ্যসেবা, খাদ্য ও পানীয়, মিডিয়া ও টেলি যোগাযোগ সহ বহুবিধ ব্যবসা রয়েছে কোম্পানিটির। বিশ্বব্যাপী তাদের রয়েছে চার শতাধিক কোম্পানি। ২০১৪ সালের নভেম্বরের হিসাব মতে এ গ্রুপের নেট সম্পদের পরিমাণ ৫০০ থেকে সাড়ে ৫ শত কোটি পাউন্ড।
অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, বৃহস্পতিবারের ব্রেক্সিট গণভোটের পর শুক্রবার ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বৃটেন বেরিয়ে যাওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাতে তার কোম্পানির এক তৃতীয়াংশ অর্থ হারিয়েছে। ব্রেক্সিটের ফলে শেয়ার বাজারের ধসের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, এ জন্য তাদেরকে একটি ‘ভেরি বিগ ডিল’ বা বিরাট একটি চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। এই চুক্তিটি চূড়ান্ত করা গেলে যুক্তরাজ্যে ৩০০০ কর্মসংস্থান হতো। আইটিভি’র গুড মর্নিং বৃটেন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ভার্জিন গ্রুপের মালিকানা রয়েছে চ্যালেঞ্জিং ব্যাংকিং ‘ভার্জিন মানি’তে। শুক্রবারের পর থেকে তারা তাদের মোট মূলধনের শতকরা ২০ ভাগেরও বেশি লোকসান করেছে। ফলে স্যার রিচার্ড ব্রানসন সতর্ক করে বলেছেন, আবার এই দেশ (বৃটেন) অর্থনৈতিক মন্দায় পতিত হচ্ছে।
এসঅ্যান্ডপি ডো জোনসের সূচকের সিনিয়র বিশ্লেষক হাওয়ার্ড সিলভারব্লাট বলেছেন, শেয়ার বাজার রেকর্ড পরিমাণ লোকসানের শিকার হয়েছে। শুক্রবার থেকে বিশ্বের শেয়ারবাজার রেকর্ড পরিমাণ তিন লাখ কোটি পাউন্ড হারিয়েছে। দু’দিনে সবচেয়ে বেশি লোকসান হয়েছে এসঅ্যান্ডপির গ্লোবাল ব্রোড মার্কেট ইনডেক্সে। অর্থনীতির যখন এই অবস্থা তখন বৃটিশ সরকারকে সতর্ক করেছেন রিচার্ড ব্রানসন। তিনি বলেছেন, ইউরোপ ছাড়ার সিদ্ধান্তে মারাত্মক ক্ষতি হবে। এ জন্য দ্বিতীয় গণভোট দেয়ার জন্য তিনি বৃটিশ সরকারের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যেসব মানুষ ইউরোপিয় ইউনিয়ন ছাড়ার পক্ষে ভোট দিয়েছেন তাদেরকে ভুল তথ্য দেয়া হয়েছিল। কিভাবে জাতীয় স্বাস্থ্যখাতে অর্থ যায় বা ব্যয় হয় ও কিভাবে অভিবাসন কমিয়ে আনা যায় তা নিয়ে তাদেরকে ভুল নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল। ফলে এখন আমরা (বৃটিশরা) একটি বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ব্যবসায় যদি আপনি একটি খারাপ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তখন তা পাল্টে নিতে পারেন। কিন্তু এখন আমরা এটাকে (ব্রেক্সিট) পাল্টে ফেলতে বলছি না। আমরা যেটা বলছি তা হলো, জনগণকে একটি দ্বিতীয় সুযোগ দিন। একই সঙ্গে রিচার্ড ব্রানসন ভোটারের বয়স কমিয়ে ১৬ বছর করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর ফলে যুব সমাজ তাদের ভবিষ্যত নির্বাচনে বৃহত্তর ক্ষমতা পাবে। এই যুব সমাজকে সুযোগ দিতেই হবে। কারণ, তারাই ভবিষ্যতের দেশনেতা।