ফ্রান্সকে হারিয়ে ইউরো চ্যাম্পিয়ন পর্তুগাল
ফ্রান্সকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইউরোর শিরোপা জিতেছে পর্তুগাল। অতিরিক্ত সময়ে এডারের চমৎকার গোলে স্বাগতিকদের হতাশ করে শিরোপা উৎসবে মাতে পর্তুগিজরা। আর ১০ম দেশ হিসেবে ইউরোর শিরোপা জিতে নেয় ফার্নান্দো সান্তোসের দল।
সাঁ-দেনিতে ফাইনালে প্রথমার্ধের ২৪ মিনিটে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন রোনাল্ডো। কিন্তু সতীর্থরা হতাশ করেনি অধিনায়ককে।
পর্তুগালের ইউরো স্কোয়াডে থাকলেও সাইড বেঞ্চেই স্থান হয়েছিল এডারের। ফাইনালে তিনি খেলতে পারবেন সেটি হয়তো কল্পনাও করেননি। দুর্ঘটনাবশত রোনাল্ডো ইনজুরিতে পরায় সবকিছু নতুন করে ভাবতে হয় পর্তুগালের কোচকে।
সে কারণে ৭৯ মিনিটে সবচেয়ে কম বয়সে ইউরোর ফাইনালে খেলা রেটেনা সানচেজের বদলি হিসেবে মাঠে নামার সুযোগ হয় এডারের। মাঠে নেমে ২০ মিনিট মাঠ দাবড়িয়ে খেলেন। ১০৯ মিনিটের মাথায় জোয়ার মোতিনহোর কাছ থেকে বল পেয়ে যান এডার।
ফ্রান্সের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়কে কাটিয়ে ডি-বক্সের কাছাকাছি যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সামনে ফ্রান্সের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে দেখে ২৫ গজ দূর থেকেই ডান পায়ের জোরালো শট নেন। সেটি ফ্রান্সের গোলরক্ষকের নাগালের বাইরে দিয়ে জালে আশ্রয় নেয় (১-০)।
শেষ পর্যন্ত সাইডবেঞ্চের এডারই নায়ক বনে গেলেন পর্তুগালের ইউরো শিরোপা জয়ের। তার হাত ধরেই যে প্রথম কোনো বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল পর্তুগিজরা।ফাইনালের দ্বিতীয়ার্ধ আর অতিরিক্ত সময়ের উত্তেজনার কমতি ছিল না; কিন্তু ফুটবলপ্রেমীদের হতাশ করেছে প্রথমার্ধের খেলা।
রবিবার রাতে ম্যাচের চতুর্থ মিনিটে পাল্টা আক্রমণে প্রথম ভালো সুযোগটা পেয়েছিলেন নানি। ডি-বক্সে বুক দিয়ে বল নামিয়ে এই ফরোয়ার্ডের নেওয়া শট চলে যায় পোস্টের উপর দিয়ে। নবম মিনিটে অঁতোয়ান গ্রিজমানের হেড দারুণ দক্ষতায় কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান পর্তুগিজ গোলরক্ষক রুই পাত্রিসিও।
এর দুই মিনিট আগে দিমিত্রি পায়েতের সঙ্গে সংঘর্ষে ব্যথা পেয়েছিলেন রোনাল্ডো। এরপর দুবার চোটের পরিচর্যায় মাঠের বাইরে গিয়ে ফিরলেও বোঝা যাচ্ছিল, এভাবে বেশিক্ষণ থাকতে পারবেন না।
শেষ পর্যন্ত অধিনায়কের আর্মব্যান্ড ছুড়ে ফেলে নিজেই ইঙ্গিত করলেন মাঠ থেকে তুলে নেয়ার। ২৪তম মিনিটে হেঁটেও বের হতে পারলেন না; স্ট্রেচারে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়তে হলো রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ডকে।
নির্ধারিত ৯০ মিনিট শেষে অতিরিক্ত সময়ের খেলা শুরুর আগে মাঠে গিয়ে সতীর্থদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন রোনাল্ডো। খুঁড়িয়েই পুরস্কার নেওয়ার জন্য সিড়ি ভেঙে উঠলেন তিনি।
ট্রফি যখন উঁচিয়ে ধরেছেন মাথার উপর তখন চোখের জল আর হাসিতে সব মিলেমিশে একাকার। ক্লাবের হয়ে সম্ভাব্য সব শিরোপা জয়ের পর দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক কোনো ট্রফি ছোঁয়াই কেবল বাকি ছিল তিন বারের বর্ষসেরা এই ফুটবলারের।