কাশ্মীরে বর্বরতা ভারতীয় গণতন্ত্রের ‘বৃহৎ কলংক’
জম্মু-কাশ্মীর সংকট ইস্যুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নীতির সমালোচনা করেছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, কাশ্মীরে সম্প্রতি যে সংঘাত ও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে তা সঠিক উপায়ে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে ভারত সরকার।
ফলে কাশ্মীর ইস্যুটি এখন ভারতীয় গণতন্ত্রের জন্য একটি ‘বৃহৎ কলংক’ হিসেবে দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার ভারতীয় দৈনিক ইন্ডিয়া টুডেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন অমর্ত্য সেন। তিনি বলেন, জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতিটি বহু দশক ধরে সরকারের অবহেলিত নীতির ফলে সৃষ্টি হয়েছে।
কাশ্মীর ইস্যুই যে এখন ভারতীয় গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় ক্ষত সে ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। বিশ্বব্যাপী অনেকেই এখন একই মত দিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সভা-সেমিনারেও এখন এই ইস্যুটি নিয়ে আলোচনা হয়। আমি প্রথম যে রাতে এখানে আসি সে রাতে মার্কিন টেলিভিশন চ্যানেল সিএনএন কাশ্মীরে পুলিশ ও আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বর্বরতার দৃশ্য প্রচার করে বলে জানান অমর্ত্য সেন। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অধ্যাপক আরও বলেন, আমি অস্বীকার করছি না যে, কাশ্মীরিরা ভারতীয় নাগরিক। মূলত কয়েক দশক ধরেই আমরা কাশ্মীর ইস্যুটি বাজেভাবে মোকাবেলা করছি। আর এখন আমার এই ইস্যুতে আরও বাজেভাবে আচরণ করছি। ভারতীয় বংশোদ্ভূত অমর্ত্য সেন আরও বলেন, কাশ্মীর সমস্যা আইনশৃংখলাজনিত কোনো সমস্যা নয়। ফলে আইনশৃংখলা রক্ষার নামে কাশ্মীরের বিক্ষোভকারী জনতার সঙ্গে যে ভয়ানক এবং সহিংস আচরণ করা হচ্ছে এবং সংবাদপত্রগুলো বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে তাতে কাশ্মীরের জনগণ আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। যার ফলে কাশ্মীরের জনগণ আর নিজেদের ভারতীয় নাগরিক হিসেবে ভাবার কোনো কারণ খুঁজে পাবে না।
গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহে দেখা গেল, ভারতীয় সৈন্যবাহিনীর হাতে বুরহান ওয়ানি নামের এক সশস্ত্র বিদ্রোহীর মৃত্যু হয় দক্ষিণ কাশ্মীরের ত্রাল এলাকায়। এরপর থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে কাশ্মীর।
নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অশান্ত হয়ে ওঠে গোটা উপত্যকা। দু’পক্ষের সংঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত হন ৪২ পুলিশ সদস্য ও বেসামরিক মানুষ।