রিপাবলিকান শিবিরে হতাশা চরমে
ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নিয়ে চরম হতাশায় রিপাবলিকানরা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য ফলাফল অনুমান করতে পেরে দলের সিনিয়র সদস্যরা এমন হতাশা প্রকাশ করেছেন। আবার কংগ্রেসেও রিপাবলিকানরা হেরে যাওয়ার ঝুঁকি এড়াতে কোনো কোনো সিনিয়র নেতা রিপাবলিকান ন্যাশনাল কমিটিকে (আরএনসি) ট্রাম্পের পিছনে লেগে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তারা বলেছেন, যদি এটা করা না হয় তাহলে দলের করুণ পরিণতি হবে।
সিএনএনের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য দিয়েছেন সাংবাদিক মানু রাজু ও দিরেদ্রি ওয়ালস। তারা লিখেছেন, ওয়াশিংটনে রিপাবলিকান দলের সিনিয়র সদস্যরা আরএনসি’কে পরামর্শ দিচ্ছেন। তারা বলছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্পের পিছনে অর্থ সহায়তা অব্যাহত রাখতে।
হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দি¦তা গড়ে তুলতে কমিটিকে এ কাজটি করতেই হবে। আর তা না করা না গেলে নির্বাচনে এক করুণ পরিণতি আসতে পারে। তাতে কংগ্রেসের নিয়ন্ত্রণও হাত ফসকে যেতে পারে। আবার দলের সাবেক ও বর্তমান সিনিয়র কর্মকর্তারা দলীয় চেয়ারম্যান রেইনস প্রিবাসের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি যেন ট্রাম্পকে ত্যাগ করেন।
অন্যরা বলছেন, বিশাল ব্যবধানে নির্বাচনে ট্রাম্পকে পরাজিত হওয়া প্রতিরোধ করতে হবে দলীয় কমিটিকে। যদি তিনি এভাবে হেরে যান তাহলে কংগ্রেসে রিপাবলিকানদের আসনগুলো ঝুঁকিতে পড়ে যাবে। রিপাবলিকানরা তাদের পেনসিলভ্যানিয়া, উইসকনসিন, ফ্লোরিডা, ওহাইও, নর্থ ক্যারোলাইনা ও নিউ হ্যাম্পশায়ারের সবগুলো আসন ধরে রাখার ক্ষেত্রে লড়াই করছে। সেখানে হিলারির বিরুদ্ধে কীভাবে তাদের প্রার্থীকে বিজয়ী করা যায় তা নিয়ে দলের ভিতর ক্রমেই বিভক্তি দেখা দিচ্ছে।
শীর্ষ স্থানীয় রিপাবলিকানরা বলছেন, যদি এসব রাজ্যে ১০ পয়েন্ট বা তারও বেশি ব্যবধানে ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজিত হন তাহলে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে উঠতে পারে। তবে যদি ট্রাম্প ৪ থেকে ৬ পয়েন্টের ব্যবধানে পরাজিত হন তাহলে তিনি শক্তিশালী অবস্থানে থাকবেন। এমনটা মনে করেন সিনেট মেজরিটি নেতা মিশ ম্যাককনেলের সঙ্গে যুক্ত একটি গ্রুপের মুখপাত্র ইয়ান প্রিয়র। এই গ্রুপটি সিনেট নির্বাচনে প্রায় ৩ কোটি ডলার খরচ করেছে।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ও এনবিসির এ মাসের শুরুর দিকে চালানো জরিপের ফল অনুযায়ী নর্থ ক্যারোলাইনায় হিলারির চেয়ে ৯ পয়েন্টে পিছিয়ে আছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা নিয়েই রিপাবলিকানদের মধ্যে উদ্বেগ। এখানে বিজ্ঞাপন খাতে ডেমোক্রেটরা বরাদ্দ রেখেছে ২ কোটি ডলার। রিপাবলিকানরা মনে করছেন, এখানে প্রচারণায় এখনই বিজ্ঞাপনী প্রচারণা চালাবেন ট্রাম্প। আর তার মধ্য দিয়ে জরিপের ফল উল্টে দেবেন। তবে অনেক রিপাবলিকানের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে যে, এ রাজ্যটি বুঝি হাতছাড়া হয়ে যাচ্ছে।
এমন এক অবস্থায় বুধবার দলীয় প্রধান কার্যালয়ে প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যদের প্রধানদের সঙ্গে ট্রাম্পের নির্বাচনী সিনিয়র কর্মকর্তারা প্রাইভেট বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পরে যে বার্তা পাওয়া গেছে তা পরিষ্কার। তা হলো তারা চান সবল ট্রাম্পকে, যিনি কংগ্রেসকে ধরে রাখতে সহায়তা করতে পারেন। এখন পর্যন্ত দলের অবসরপ্রাপ্ত দুজন কংগ্রেসম্যান স্কট রাইজেল ও রিড রিবল সহ কমপক্ষে ১১০ জন রিপাবলিকান বলেছেন, ট্রাম্প হলেন পরাজয়ের কারণ। তাই তারা দলীয় কমিটির কাছে ট্রাম্পকে বাদ দিতে একটি চিঠিতে স্বাক্ষর করছেন।