নিরানন্দ ভালবাসাহীন জীবন কাটছে নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর পরিবারের
বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক গুম বিরোধী দিবস। ইন্টারন্যাশনাল কোয়ালিশন অ্যাগেইনস্ট এনফোর্সড ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স নামে একটা আন্তর্জাতিক সংস্থা বলছে, চলতি বছরে জুলাই মাস পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫২ জন মানুষ নিখোঁজ বা গুমের শিকার হয়েছে।
এদের মধ্যে ৭ জনের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। ৩৩ জনকে পরবর্তীতে পাওয়া গেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হেফাজতে। ১২ জনের খবর আজো অজানা।
অনেকেই মনে করেন বাংলাদেশের বেশীরভাগ গুমের পেছনেই থাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাত।
২০১২ সালের ১৮ই এপ্রিল ঢাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন সে সময়কার বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সিলেটে বিএনপির অত্যন্ত প্রভাবশালী একজন নেতা ইলিয়াস আলী।
মধ্যরাতের পর ঢাকার মহাখালী থেকে তাকে বহনকারী গাড়িটি পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। মি. আলীকে আর পাওয়া যায়নি। আজো মেলেনি তার খোঁজ।
তার স্ত্রী তাহসিনা রুশদির স্বামীকে উদ্ধারের জন সম্ভাব্য সব রকমের চেষ্টা করেন।এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে দেখা করেও তার সাহায্য কামনা করেন।
সাড়ে চার বছর পর এসে মিসেস রুশদির এখন বলছেন, সেসময় প্রধানমন্ত্রী এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে বারবার যোগাযোগ করেও কোনও ধরণের সদুত্তর তিনি পাননি।
কিন্তু মিসেস রুশদিরের ধারণা, তার স্বামী নিখোঁজ হবার পেছনে রয়েছে সরকারের হাত।
বিবিসিকে তিনি বলেন, “যেহেতু প্রমাণ নেই সেহেতু বলতে পারিনা। তবে আমাদের ধারণা এর সাথে অবশ্যই আইন প্রয়োগকারী সংস্থা জড়িত।
আমার স্বামী একজন বিরোধী দলের বড় পর্যায়ের নেতা এবং উনি একজন সাবেক সংসদ সদস্য। আমরা বারবার দেশের সরকারের কাছ থেকে সাহায্য চাইলেও ওনাদের কাছ থেকে কোন সন্ধান পাইনি। ওনারা নিশ্চুপ থেকেছে কেন এটা ওনারাই ভাল বলতে পারবেন”।
অবশ্য মিসেস রুশদির আজো মনে করেন তার স্বামী বেঁচে আছেন।
তার ভাষায়, “আমাদের পরিবারের সকল সদস্য প্রতিনিয়তই প্রত্যাশা করি হয়ত উনি ফিরে আসবেন। শুধু আমরা নই, আমাদের সিলেটের অসংখ্য নেতাকর্মী একই বিশ্বাস ধারণ করে যে ইলিয়াস আলী একদিন ফিরে আসবেন”।
স্বামীহীন এই সাড়ে চার বছর কেমন কেটেছে জানতে চাইলে মিসেস রুশদির বলেন, “দিন যেহেতু থেমে থাকে না, সেহেতু চলছে আরকি। নিরানন্দ-ভালবাসাহীন জীবন আমাদের কাটছে”। -বিবিসি