ইরানি শিয়ারা মুসলিম নয় : গ্র্যান্ড মুফতি

Abdulaziz Al al-Sheikhসৌদি গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল-শায়খ বলেছেন, ইরানি শিয়ারা মুসলমান নয়। সৌদির হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির মন্তব্যের একদিন পর স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মক্কা ডেইলির কাছে মসজিদে আল হারামের প্রধান ইমাম এ মন্তব্য করলেন।
ইরানের শিয়াদের ‘প্রাক-ইসলামী’ বিশ্বাসের কথা তুলে ধরে গ্র্যান্ড মুফতি আবদুল আজিজ আল-শায়খ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, আমাদের অবশ্যই বুঝতে হবে, এরা মুসলমান নয়। তারা মেজাইয়ের (খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের কাছে পবিত্র তিন সন্ত) বংশধর। ইসলামের সঙ্গে তাদের শত্রুতা প্রাচীন। এ ছাড়া তিনি সুন্নি মতবাদকে ইসলামের মূল শাখা হিসেবেও উপস্থাপন করেন।
হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির বক্তব্যের একদিন পরেই গ্র্যান্ড মুফতির এই পাল্টা জবাবকে ইরানের সঙ্গে সৌদি সরকারের সম্পর্কের শীতলতার বহিঃপ্রকাশ বলে মন্তব্য আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের। সোমবার মুসলমানদের পবিত্র দুই নগরী মক্কা ও মদিনায় সৌদি ব্যবস্থাপনার বিষয়ে মুসলিম বিশ্বের আপত্তি জানানো উচিত বলে মন্তব্য করেছিলেন ইরানের সর্বোচ্চ এই ধর্মীয় নেতা।
এর আগে গেল বছর পবিত্র হজ পালনের সময় পদপিষ্টে আহত হজযাত্রীদের সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেছিল ইরান। এ বছর পবিত্র হজের আয়োজন চলার সময় এক বিবৃতির মাধ্যমে এ অভিযোগ জানানো হলো।
ব্রিটেনের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, নিজের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি অভিযোগ করেন, আহত হজযাত্রীদের ন্যূনতম চিকিৎসাসেবা বা তৃষ্ণা মেটানোর পানি না দিয়ে উল্টো মৃতদের সঙ্গে তাঁদের কনটেইনারে তালাবদ্ধ করে রাখে হৃদয়হীন ও খুনি জাতি সৌদি। তারা ওই সব আহত হজযাত্রীকে হত্যা করেছে।
গত বছর হজ চলাকালে পদপিষ্ট হয়ে হজযাত্রী নিহত হওয়ার ঘটনার এক বছর পূর্তিতে এই বিবৃতি দিলেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা। একই সঙ্গে হজ অনুষ্ঠান পরিচালনার জন্য নতুন কোনো পক্ষকে দায়িত্ব দেওয়ারও দাবি জানান তিনি। অবশ্য এসব অভিযোগের বিপরীতে কোনো প্রমাণ হাজির করেননি আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি।
এদিকে, ইরান পবিত্র হজ পালনের বিষয়টি রাজনীতিকীকরণ করতে চাইছে বলে মন্তব্য করেছেন সৌদি আরবের যুবরাজ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন নায়েফ।
ইরানের ওই বিবৃতির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার সৌদি প্রেস এজেন্সিকে মোহাম্মদ বিন নায়েফ বলেন, এ বছর হজ পালনে নিজেদের কোনো নাগরিককে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান।
২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে হজ চলাকালে পদপিষ্ট হয়ে মারা যান দুই হাজার ৪২৬ হজযাত্রী। এর মধ্যে ৪৬৪ জন ইরানি ছিলেন জানিয়ে এ ঘটনার জন্য সৌদি আরবের ব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে ইরান। এর আগে মক্কায় একটি ক্রেন দুর্ঘটনায় ১১১ জন নিহত হওয়ার ঘটনায়ও সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষকে দায়ী করেন আয়াতুল্লাহ খামেনি। সে সময় তিনি সৌদি আরবের শাসকদের ‘শয়তান’ বলে অভিহিত করেন।
এ বছর হজযাত্রীদের নিরাপত্তায় ইলেকট্রনিক ব্রেসলেট ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। সে সঙ্গে কোনো ধরনের হুড়োহুড়ি ঠেকাতে পর্যাপ্ত ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button