আজ শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিন

Hasinaপ্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার ৭০তম জন্মদিন আজ। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছার প্রথম সন্তান তিনি। ১৯৪৭ সালের এ দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। শেখ হাসিনা বর্তমানে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭১তম অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, মঠসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার শিক্ষাজীবন শুরু হয় টুঙ্গিপাড়ার এক পাঠশালায়। ১৯৫৪ সালের পর ঢাকায় চলে এলে শেখ হাসিনা ঢাকা শহরে টিকাটুলির নারী শিক্ষা মন্দিরে ভর্তি হন। বর্তমানে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শেরেবাংলা গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ নামে খ্যাত। শেখ হাসিনা ১৯৬৫ সালে আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক, ১৯৬৭ সালে ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ (বর্তমানে বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ওই বছরেই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্সে ভর্তি হন এবং ১৯৭৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
শেখ হাসিনা ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজে পড়ার সময় ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সদস্য এবং রোকেয়া হল শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ছাত্রলীগের নেত্রী হিসেবে তিনি আইয়ুববিরোধী আন্দোলন এবং ছয় দফা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৬৮ সালে পরমাণুবিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনার বিয়ে হয়।
১৯৭৫ সালে সপরিবারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নিহত হওয়ার আগে ছোট বোন শেখ রেহানাসহ শেখ হাসিনা ইউরোপ যান। হেগে অবস্থানকালে তিনি সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নিহত হওয়ার খবর পান। পরে ইউরোপ ছেড়ে স্বামী-সন্তানসহ ভারতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। ১৯৮১ সালের ১৩ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। আর ওই বছরে ১৭ মে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। ১৯৮৬ সালের সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা তিনটি আসন থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালের ঐতিহাসিক গণ-আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনের পরে তিনি পঞ্চম জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করে এবং সে বছরের ২৩ জুন দেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনা সপ্তম জাতীয় সংসদে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন।
২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দুই-তৃতীয়াংশের বেশি আসন নিয়ে বিজয় অর্জন করে। শেখ হাসিনা দ্বিতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। পরে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
কর্মসূচি: প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকেশ্বরী মন্দিরে এবং প্যাগোডা, গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’র দলীয় কার্যালয় সম্মুখে আলোচনা সভা, ‘সময়রেখায় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন, শেখ হাসিনার জীবনভিত্তিক সংবাদচিত্র প্রদর্শনী, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হবে। ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ একদিন আগেই গতকাল জš§দিন উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। ছাত্রলীগ সারাদেশে আনন্দ মিছিল ও মিষ্টি বিতরণ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কেন্দ্রীয় ভাবে সকাল ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ পর্যন্ত আনন্দ মিছিল বের করবে। এছাড়াও অন্যন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button