ভারতের ১৮টি বিমান ঘাঁটিতে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতি
পাক-ভারত উত্তেজনা
উরি সেনাঘাঁটিতে হামলার পর কূটনৈতিক স্তর বা সীমান্তে ভারত-পাক সম্পর্ক এখন যথেষ্ট অস্থির। এর মধ্যেই ভারতের পশ্চিম সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। সূত্রের খবর, সীমান্তে ১৮টি বিমানঘাঁটিতে জোরকদমে চলছে যুদ্ধের প্রস্তুতিও।
প্রতিরক্ষা সূত্রে খবর, শুরু হয়ে গেছে ‘এক্সসারসাইজ তালন’। ‘তালন’-এর মূল লক্ষ্যই হল ভারতের গোটা পশ্চিম সীমান্ত অর্থাৎ জম্মু-কাশ্মীর থেকে রাজস্থান পর্যন্ত নিরাপত্তা নজরদারি আরও বাড়ানো। এছাড়াও প্রত্যেক মুহূর্তে বিমানবাহিনীর সদস্যরা আকাশপথে নজরদারি রাখছে ওই অঞ্চলে প্রত্যেকের গতিবিধির ওপর। টাইমস অব ইন্ডিয়া।
তবে সম্প্রতি পাকিস্তানের আকাশে চক্কর দিতে দেখা গেছে পাকিস্তানের এফ-১৬ ও অন্য যুদ্ধ জাহাজকে। ইদানিংকালে আকাশে চক্কর দেওয়া ছাড়াও পাক যুদ্ধজাহাজকে জাতীয় সড়কে নামারও প্রস্তুতি নিতে দেখা গিয়েছে।সূত্রের দাবি, ভারতীয় বায়ুসেনা পরিস্থিতি সামলাতে আরও গোপনে তাদের কার্যকলাপ চালাচ্ছে। এরমধ্যেই ভারতের ৭৭৮ কিমি লম্বা নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর মোতায়েন করা হয়েছে আরও বেশি সংখ্যক সেনাবাহিনী।
এছাড়াও গত এক সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একাধিকবার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছেন তিন প্রতিরক্ষা বাহিনীর প্রধানেরা। বৈঠক হয়েছে সাউথ ব্লকের ওয়াররুমেও। এরমধ্যেই সপ্তাহশেষে সেনাবাহিনীর পশ্চিম কম্যান্ডোর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল সুরিন্দর সিংহ জম্মু-পঠানকোট সীমান্তে গিয়েছিলেন। সেখানে তিনি তাঁর বাহিনীর কমান্ডারদের নিন্দেশ দিয়েছেন সবসময় যেকোনও পরিস্থিতির জন্যে প্রস্তুত থাকতে এবং অবশ্যই সজাগ থাকতে।
আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে পাকিস্তান: ভারত সিন্ধু চুক্তি লঙ্ঘন বা বাতিলের বিষয়ে বৈঠক করার পর পাকিস্তান বলেছে, আন্তর্জাতিক এই চুক্তি লঙ্ঘন করলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে দেশটি।
গতকাল মঙ্গলবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা সারতাজ আজিজ বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তির ব্যাপারে একতরফা কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারে না ভারত। এই চুক্তি লঙ্ঘন করা হলে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক আদালতে যাবে।’ তিনি বলেন, ‘একতরফাভাবে চুক্তি প্রত্যাহার করে ভারত পাকিস্তানকে অর্থনৈতিক হুমকিতে ফেলতে পারে কিন্তু এটি হবে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এবং ভারত শান্তিচুক্তি বাতিল করলে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের কাছে পাকিস্তান একটি ভাল কারণ দেখাতে পারবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কারগিল ও সিয়াচিন সংঘর্ষের সময়ও চুক্তির ওপর কোন প্রভাব পড়েনি।’
১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থায় পাক-প্রেসিডেন্ট আইয়ূব খান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু এই চুক্তি স্বাক্ষর করেন। চুক্তির শর্ত অনুসারে সিন্ধু নদের ৬ টি শাখানদীর মধ্যে ৩টি’র পানি পাবে ভারত ও ৩ টির পানি পাবে পাকিস্তান। কিন্তু সোমবার ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এখন থেকে ছয়টি নদির বেশিরভাগ পানিই ব্যবহার করবে ভারত। মোদি আরো বলেন, ‘রক্ত আর পানি একসাথে প্রবাহিত হতে পারে না।’উল্লেখ্য, উরির সেনা ছাউনিতে জঙ্গি হামলার পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে হুমকি-পাল্টা হুমকির মাধ্যমে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।