লন্ডনে বাঙালি তরুণকে পুলিশি নির্যাতন, কমিউনিটিতে উত্তেজনা

towerলন্ডনে এক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত তরুণের গাড়ি তল্লাশি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে তুমুল উত্তেজনা। তল্লাশির সময় ওই তরুণের উপর পুলিশি নির্যাতনের ভিডিওক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ক্ষোভে ফেটে পড়ে পূর্ব লন্ডনের বাঙালি কমিউনিটি।
একইসঙ্গে ওই পুলিশ সদস্যের বহিষ্কার ও শাস্তির দাবিতে কমিউনিটিতে চলছে ব্যাপক আন্দোলনের প্রস্তুতি।
তবে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে কমিউনিটিকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন টাওয়ার হ্যামলেটসের নির্বাহী মেয়র জন বিগস।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত রোববার (৯ অক্টোবর) পূর্ব লন্ডনের স্টেপনি গ্রিনে ক’জন বাঙালি তরুণকে সিভিল ড্রেসের পুলিশ জিজ্ঞাসবাদ শেষে ছেড়ে দেন। পরে একজন পোশাকধারী পুলিশ এসে তাদের গাড়ির পেট্রোল ট্যাঙ্কের ক্যাপ খুলে ফের অনুসন্ধান শুরু করলে নির্যাতনের শিকার তরুণ এর প্রতিবাদ করেন।
এ নিয়ে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের এক পর্যায়ে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য ওই তরুণকে শারীরিক নির্যাতন করেন। ওই পুলিশ সদস্য তরুণের মাথা নিচের দিকে চেপে ধরে ঘাড়ে আঘাত করতে থাকলেও উপস্থিত অন্য পুলিশ সদস্যদের তাকে নিবৃত করার চেষ্টা করতে দেখা যায়নি।
ঘটনার কিছুক্ষণ পরই এই নির্যাতনের একটি ভিডিওক্লিপ ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে তোলপাড় শুরু হয় পুরো কমিউনিটিতে। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি অন্যরাও ক্ষোভে ফেটে পড়েন। অনেকে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বহিষ্কার ও শাস্তি দাবি জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মন্তব্য করতে থাকেন।
কমিউনিটির উত্তেজনা টের পেয়ে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র জন বিগস সোমবার (১০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে পুলিশ অফিসারের এ আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত বিরক্তিকর ভিডিওটি দেখার পরপরই বারা কমান্ডারের সঙ্গে জরুরি মিটিংয়ের আহ্বান জানিয়ে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে সংশ্লিষ্ট অফিসারের শাস্তি ও পুলিশের পক্ষ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা দেখতে চাই।
বিবৃতিতে মেয়র আরও বলেন, আমি জানি এ ঘটনায় আমাদের কমিউনিটির অনেকেই ক্ষুব্ধ। তারপরও উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শান্ত থাকার জন্য আমি সবার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, পুলিশের প্রতি কমিউনিটির আস্থা ও বিশ্বাস জরুরি। এ ধরনের ঘটনা পুলিশের প্রতি কমিউনিটির দীর্ঘদিনের গড়ে ওঠা আস্থা ধ্বংস করে দিতে পারে।
কমিউনিটি নেতা, বৈশাখী মেলা ট্রাস্টের সাবেক চেয়ারম্যান সিরাজ হক ঘটনার পরপরই অনেকেই তাকে বিষয়টি অবহিত করে আন্দোলনের ডাক দেওয়ার অনুরোধ করছেন জানিয়ে বলেন, এ ঘটনার মতো অহরহ ঘটনা ইস্ট-এন্ডে ঘটছে। নির্যাতিত মানুষ যাবে কোথায়?
সিরাজ হক দাবি করেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে তিনি চেনেন। তার এমন উগ্র আচরণের প্রতিবাদও তিনি একবার করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে এবং শিগগিরই কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনাও রয়েছে বাংলানিউজকে জানান তিনি। -বাংলানিউজ

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button