যুক্তরাষ্ট্রে শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণা তুঙ্গে
যুক্তরাষ্ট্রে আর দু’দিন পরেই নির্বাচন। তাই শেষ মুহূর্তের নির্বাচনী প্রচারণা এখন তুঙ্গে। ভোটারদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন রাজ্যে চষে বেড়াচ্ছেন ডেমোক্রেটিক দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। প্রতিদিন কোন না কোন নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিচ্ছেন। একে অপরকে আক্রমণ ও সমালোচনা করে বক্তৃতা করছেন।
নির্বাচনী প্রচারণার শুরু দিকে বিভিন্ন জনমত জরিপে ট্রাম্পের চেয়ে হিলারি ভাল ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু শেষ দিকে এসে জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে ট্রাম্পের জনসমর্থন আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে। অনেকে দুই প্রার্থীর মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পূর্বাভাস দিচ্ছেন। এ প্রেক্ষিতে ডেমোক্রেটদের জন্য নিরাপদ বলে যেসব রাজ্যকে বিবেচনা করা হচ্ছিল সেসব রাজ্যের দিকেও এখন বিশেষ নজর দিচ্ছেন হিলারি ক্লিনটন। দিনরাত চষে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন রাজ্যে। অংশ নিচ্ছেন সভা, সমাবেশে। ট্রাম্পও বসে নেই। জনসমর্থন বেড়ে যাওয়ায় আশাবাদী হয়ে উঠেছেন তিনি। তাই ভোটারদের টানতে হিলারির বিরুদ্ধে সবরকম অস্ত্র ব্যবহার করছেন তিনি।
ট্রাম এখন ডেমোক্রেটদের শক্ত ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত রাজ্যগুলোর প্রতি মনোযোগ দিচ্ছেন। তিনি পেনসিলভানিয়া, মিশিগান ও মিনেসোটা যাবেন। ১৯৭২ সালের পর থেকে রিপাবলিকানরা এখানে জেতেনি।
শনিবার সন্ধ্যায় নেভাদার রেনোতে ভাষণ দেয়ার সময় গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন আকস্মিকভাবে তাকে মঞ্চ থেকে কিছুক্ষণের জন্য সরিয়ে নেন। মিলনায়তনে কিছু একটা দেখার পর ট্রাম তার বক্তৃতা বন্ধ করে দেন। তবে কয়েক মিনিটের মধ্যেই তিনি আবার মঞ্চে ফেরেন।
স্থানীয় আইনপ্রয়োগকারী কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল থেকে এক ব্যক্তিকে আটক করে তাকে তল্লাশি করে।
খবর ছড়িয়ে পড়ে, ওই লোকের কাছে বন্দুক ছিল। তবে গোয়েন্দা সংস্থা পরে জানায়, গোটা এলাকা ও ওই লোকের সারা শরীর তল্লাশি করা হয়। তবে কোন অস্ত্র পাওয়া যায়নি।
এরপর ট্রাম মঞ্চে ফিরে ভাষণে বলেন, ‘কেউ বলেনি, এটা আমাদের জন্য সহজ হবে। আমি গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
এর আগে তিনি ফ্লোরিডায় প্রচারণা চালান। হিলারিও এখানে প্রচারণা চালিয়েছেন।
এরপর হিলারি পেনসিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়ায় নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন। এর অংশ হিসেবে তিনি সুপারস্টার কেরি পেরির কনসার্টে যোগ দেন। কেটি পেরি এ সময় হিলারির প্রতি তার সমর্থন প্রকাশ করেন।
এ সময় হিলারি বলেন, ‘যখন আপনাদের বাচ্চা ও নাতি-নাতনিরা জিজ্ঞাসা করবে, ২০১৬ সালে তোমরা কি করেছিলে। আমি চাই তখন আপনারা বলতে পারবেন যে আপনারা একটি উন্নত, শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ আমেরিকার পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।’
উভয় দল এখন সিদ্ধান্তহীন ভোটারদের চেয়ে নিজ দলের সমর্থকদের ভোট টানতে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের তিন কোটি ৭০ লাখ মানুষ ইতোমধ্যে আগাম ভোট দিয়েছেন।
এদিকে নির্বাচনের দিন হামলার আশংকা করা হয়েছে। মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলেছে, তারা আল কায়েদার সম্ভাব্য সন্ত্রাসীর হামলা সম্পর্কিত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা যাচাই করছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাটেলগ্রাউন্ড রাজ্যগুলোতে (যেসব রাজ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হতে পারে) ভোটারদের টানতে যখন হিলারি ও ট্রাম্প সচেষ্ট রয়েছেন ঠিক তখনই সম্ভাব্য এ হামলার হুঁশিয়ারি করা হয়েছে। -বাসস