অস্বস্তিতে আমেরিকার বাণিজ্য ও পর্যটন খাত
ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসী পছন্দ করেন না। প্রচারে বলেছেন, মুসলিমদের আমেরিকায় ঢুকতে দেবেন না। আর মেক্সিকোর সীমান্তে দেয়াল তুলে দেবেন। তিনিই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন। চিন্তায় ‘ব্র্যান্ড ইউএসএ’, ২০১০ সালে রীতিমতো আইন করে আমেরিকায় পর্যটনের প্রসারে যে সরকারি সংস্থা গড়ে তোলা হয়েছিল। গত বছর, ফ্রান্সের পর আমেরিকাতেই সবথেকে বেশি পর্যটক ভিড় করেছিলেন। তার মধ্যে কানাডার পরেই সবথেকে বেশি পর্যটক এসেছিলেন মেক্সিকো থেকে। যে দেশকে দেয়াল তুলে আলাদা করে দেয়ার হুমকি দিয়ে রেখেছেন ট্রাম্প। প্রচুর পর্যটক এসেছেন সৌদি দেশগুলো থেকে, দক্ষিণ এশিয়া থেকে, যাদের এক বড় অংশই মুসলিম। গত বছর পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে ৭৬ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে আমেরিকায়। পর্যটনের পাশাপাশি মার্কিন স্কুলকলেজে প্রায় ১০ লাখ বিদেশি ছাত্রছাত্রীর কথাও বলা হচ্ছে। চীন এবং ভারত থেকে আসা পড়ুয়ারা সংখ্যার হিসেবে এই তালিকার শীর্ষে আছেন।
২০১৪১৫ আর্থিক বছরে আমেরিকায় বিদেশি ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বেড়েছে ১০ হারে, যা অন্য কোনও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে ঘটেনি। এই বিদেশি পড়ুয়াদের থেকে মার্কিন সরকারের তহবিলে বছরে জমা হয় ৩০০০ কোটি ডলার। এবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক নির্বাচনী কথাবার্তা যদি অক্ষরে অক্ষরে পালিত হয়, তা হলে এই বাণিজ্যিক সম্ভাবনার জায়গাটি পুরো লন্ডভন্ড হয়ে যাবে। আমেরিকার কৌশলগত পরামর্শদাতারা পরিষ্কারই বলছেন, আমেরিকাকে বহির্বিশ্ব যেভাবে দেখে, বা দেখতে চায়, ট্রাম্পের আমেরিকার সঙ্গে তার কোনো মিলই নেই। এবার ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর তার সেই দৃষ্টিভঙ্গি তিনি দেশের ভবিষ্যৎ নীতির ওপর কতটা চাপিয়ে দেন, তার কতটা প্রভাব বাস্তব জীবনে পড়ে, সে সবই এখনো দেখা বাকি। এমনকী আমেরিকার হলিউডকেন্দ্রিক বিনোদন জগতেও ট্রাম্পের প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। উদাহরণ হিসেবে তারা হলিউডি সিনেমার কথা বলেছেন, যেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট মানেই অত্যন্ত ঠান্ডা মাথার, স্মার্ট, সতর্ক একজন রাষ্ট্রনেতা। যিনি একাই এয়ারফোর্স ওয়ান ছিনতাইকারী জঙ্গিদের সঙ্গে লড়ে যান, এমনকি গ্রহান্তরের হামলাকারী এলিয়েনের বিরুদ্ধেও বুক চিতিয়ে লড়ে যান, নির্ভীক। সেই ইচ্ছেপূরণের ছবিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প কতটা মানানসই হবেন, সেটা দেখতেও মুখিয়ে আছেন সবাই।