বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকছে বাংলাদেশের দিকে
পূর্ব এশীয় দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান শ্রম ব্যয়ের কারণে বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা বাংলাদেশের দিকে ঝুঁকছে বলে বিশ্বব্যাংক গ্রুপের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
‘সাউথ এশিয়া’স টার্ন পলিসিজ টু বুস্ট কমপিটিটিভনেস এন্ড ক্রিয়েট দ্য নেক্সট এক্সপোর্ট পাওয়ার হাউজ’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গতকাল সোমবার রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে প্রকাশ করা হয়। বিশ্বব্যাংক গ্রুপ এবং পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) যৌথভাবে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান মনসুরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন মোহাম্মদিয়া গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবিনা হক, এসিআই লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ দোলা, বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পূর্বএশীয় দেশগুলোতে ক্রমবর্ধমান শ্রম ব্যয়ের কারণে বিনিয়োগকারী ও ক্রেতারা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছে। প্রতিবছর বাংলাদেশে ২০ লাখের বেশি তরুণ কর্মবাজারে প্রবেশ করছে। এই সুযোগ লুফে নিতে এবং অধিক কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বাংলাদেশের এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
এতে বলা হয়, বাণিজ্য সংস্কারের মাধ্যমে বাণিজ্য ব্যবস্থার উন্নতি ও ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নতির মাধ্যমে বাংলাদেশ পূর্ব এশীয় দেশগুলোর মতো রফতানি শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবে।
বাংলাদেশের ব্যবসা ও শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং বৈশ্বিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে আরও বেশি সক্ষমতা বাড়াতে প্রতিবেদনে চারটি নীতিগত ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলো হলো- ব্যবসার পরিবেশ উন্নতি, গ্লোবাল ভ্যালু চেইনের সঙ্গে সংযুক্তকরণ, একই জায়গায় অবস্থান থেকে উৎপাদন সুবিধার সর্বোচ্চকরণ এবং প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বাড়ানো।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০৩০ সাল নাগাদ দক্ষিণ এশিয়া বিশ্বের কর্মক্ষম এক চতুর্থাংশেরও বেশির আবাসস্থলে পরিণত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার এই অনুকূল কার্যক্রম জনশক্তি, শিক্ষার বাড়ন্ত হার ও নগরগুলোর বর্ধিত উষ্ণতা কাজে লাগানো উচিত।
বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ট্রেড কমপিটিটিভনেস গ্লোবাল প্রাকটিস বিভাগের লিড ইকোনমিস্ট এবং প্রতিবেদনের লেখক ভিনসেন্ট পলমেড বলেন, সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উৎপাদিত পণ্যের পরিমাণ ও মানের ক্ষেত্রে কাঙ্খিত পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনি। কারণ দক্ষিণ এশীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনশীলতা কম।
বাংলাদেশ ভূটান ও নেপালে বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর চিমিয়াও ফান বলেন, বাংলাদেশের বিপুল প্রতিযোগিতা সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে হলে, বাণিজ্য ব্যবস্থার ও ব্যবসায় পরিবেশ উন্নয়ন এবং শিল্প কারখানার জন্য জমি স্বল্পতা সমস্যার সমাধান করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, সঠিক নীতিমালা এবং উপযুক্ত পরিবেশ থাকলে বাংলাদেশ এশিয়ার ভবিষ্যৎ রফতানি শক্তি না হওয়ার কোনো কারণ নেই।
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভূটানে ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স করপোরেশনের (আইএফসি) কান্ট্রি ম্যানেজার ওয়েল্ডি জো ওয়ারনার বলেন, উন্নতমানের ও অধিক কর্মসংস্থান তৈরিতে বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে হবে। যা বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।