হিজাব পরতে ভয় পাচ্ছেন আমেরিকান মুসলিম নারীরা
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই আমেরিকান মুসলিম নারীরা হিজাব পরতে ভয় পাচ্ছেন। হিজাব পরার কারণে দেশটির মুসলিম নারীরা হেইট ক্রাইমের শিকার হচ্ছেন।
নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র মুসলমানদের সম্পূর্ণভাবে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান কারণ তার মতে মুসলমানরা সহিংসতাকে সমর্থন করে।
একই সঙ্গে তিনি দেশটিতে বর্তমানে মুসলমানদের সংখ্যার হিসাব রাখতে একটি ডাটাবেস তৈরির প্রস্তাব দেন।
ট্রাম্প যে মুহূর্তে হোয়াইট হাউসে উঠার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তখন দেশটির তরুণ মুসলিম নারীরা টুইটারে জানাচ্ছেন যে, প্রকাশ্যে তাদের হিজাব, নেকাব বা বোরকা পরতে নিষেধ করা হচ্ছে।
মাশাবলের রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তরাজ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্যপদ ত্যাগের জন্য ‘ব্রেক্সিট’ গণভোটের পর থেকে সেখানে জাতিগত এবং ধর্মীয় ঘৃণা ৪১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
যদিও এ নিয়ে অনেক মুসলিম নারীরা কিছুটা ভীত তবুও সেখানে তাদের সমর্থন এবং সংহতি প্রকাশ পেয়েছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে মুসলিম নারীরা হেনস্তার শিকার হচ্ছেন।
ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান জোসে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন মুসলিম ছাত্রী পুলিশকে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কিং গ্যারেজ এলাকায় দুর্বৃত্তরা পিছন থেকে তাকে হামলা করে। এক পর্যায়ে তার হিজাব টেনে খুলে ফেলে এক দুর্বৃত্ত। তারপর তাকে জোরে ধাক্কা দেয় মাটি ফেলে দেয়।
অন্য আরেকটি ঘটনায় পুলিশের মুখপাত্র রোনাল্ড ব্রোসার্ড বলেন, সানডিয়াগো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে দুই দুর্বৃত্ত এক মুসলিম নারীর সঙ্গে তর্ক শুরু করে দেয়। এক পর্যায়ে ওই নারীকে তারা নাজেহাল করেন। পরে ওই নারীর গাড়ি চুড়ি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। আক্রমণের সময় ওই নারীর পার্সও খোয়া যায় বলে পুলিশ জানায়।
ফাহিম নিজাম (১৯) নামে এক বাংলাদেশি এক কলেজছাত্রীও হেইটক্রাইমের শিকার হয়েছেন। ফাহিমা জানান, তিনি বাসে করে ম্যানহাটনে হান্টার কলেজে যাচ্ছিলেন। বাসেই দুই জন শেতাঙ্গ আমেরিকান (স্বামী-স্ত্রী) তার কাছে এসে তাকে চিৎকার করে বলতে থাকে তার মাথা থেকে হিজাব খুলে ফেলার জন্য।
তারা ফাহিমার সাথে চিৎকার-চেঁচামেচি করতে থাকে। বলতে থাকে, মাথা থেকে বিরক্তিকর এই জিনিস খুলে ফেল।
গত শনিবার জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের এক মুসলিম শিক্ষিকা মাইরা তেলিকে হুমকি দিয়ে একটি চিঠি দেয়া হয়। পরিচয় গোপন করে লেখা চিঠিটিতে দেখা যায় মুসলিম ওই নারীকে বলা হচ্ছে, আপনি স্কুলে যে হিজাবটি পরে আসেন তা আজ থেকে বন্ধ।
এখন আপনি হিজাবটিকে ফাঁসির রশি বানিয়ে তাতে ঝুলে পড়ুন। ট্রাম্পের নির্বাচনী স্লোগান মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন দিয়ে চিঠি শেষ করা হয়।
মাইরা তেলি তার শ্রেণীকক্ষে এই চিঠি পান। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চিঠিটা পোস্ট করেন তিনি।