জর্ডানে ১০ জিম্মি ও ৪ হামলাকারী নিহত
জর্ডানের দক্ষিণের শহর কারাকে বন্দুকধারীদের গুলিতে বিদেশি পর্যটকসহ দশ জন নিহত হয়েছেন। এর কয়েক ঘণ্টা পর নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে চার হামলাকারীর নিহত হওয়ার মধ্য দিয়ে জিম্মি সঙ্কটের অবসান হয়।
রাজধানী আম্মান থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণের শহর কারাকের একটি ঐতিহাসিক দুর্গে রোববার এ ঘটনা ঘটে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদ-মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
কারাক পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, বন্দুকধারীরা প্রথমে টহল পুলিশের উপর হামলা করে। দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি শুরু হলে হামলাকারীরা একটি গাড়িতে করে পাহাড়ের চূড়ায় ওই প্রাচীন দুর্গে যায় এবং সেখানে পুলিশ পোস্টে হামলা করার পর দুর্গের ভেতরে অবস্থান নেয়। এতে দুর্গের ভেতরে পর্যটকরা আটকা পড়েন, তৈরি হয় জিম্মি সঙ্কট।
পুলিশের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার খবর পেয়ে বিশেষ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। সেখানে দীর্ঘ সময় গোলাগুলি চলার পর বিশেষ বাহিনী ওই দুর্গের নিয়ন্ত্রণ নেয়। আটকা পড়া পর্যটকদের অনেকে তার আগেই সেখান থেকে বেরিয়ে যান।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেড়াতে আসা অবিনাশ কাভালে বিবিসিকে বলেন, তিনি ও তার স্ত্রী একটি গাড়িতে করে ওই দুর্গের ফটকে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গে ভেতরে গোলাগুলি শুরু হয়।
“আমরা তখন দুর্গের গেইট থেকে মাত্র ২০ মিটার দূরে। বিভিন্ন দিক থেকে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের গুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম আমরা। গাড়ি থেকে না নেমে দ্রুত দরজা বন্ধ করে দিলাম। স্থানীয় কয়েকজন দ্রুত চলে যেতে বলল। রাস্তাটা সংকীর্ণ, তারপরও আমরা উল্টো দিকে ছুটলাম।”
বিবিসি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে একজন কানাডীয় পর্যটক, অন্তত পাঁচ পুলিশ সদস্য এবং জর্ডানের বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন।
জর্ডানের পুলিশ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, হামলাকারীদের ব্যবহৃত একটি গোপন আস্তানা থেকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র, বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও সুইসাইড বেল্ট উদ্ধার করা হয়েছে।
তবে তারা কোনো জঙ্গি সংগঠনের সদস্য কি না- সে বিষয়ে পুলিশ কিছু জানাতে পারেনি। কোনো গোষ্ঠী এই হামলার দায়ও স্বীকার করেনি।
জর্ডান আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত। সিরিয়া ও ইরাকে ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন বাহিনীতে জর্ডানের সৈন্যও রয়েছে।