রোহিঙ্গাদের জন্য খাবারের জাহাজ পাঠাচ্ছে মালয়েশিয়া
মালয়েশীয় দৈনিক দ্য স্ট্রেইটস টাইমস এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, মায়ানমারের সংঘাতময় রাখাইন রাজ্যের অসহায় রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যবাহী ফ্লোটিলা বা জাহাজ পাঠাচ্ছে মালয়েশিয়া।
বঙ্গোপসাগরের উপকূলে অবস্থান করে ফ্লোটিলা থেকে ২০০ টন চাল, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী সরবরাহ করা হবে বলে জানা যায়।
মালয়েশিয়ার বন্দর ক্ল্যাং থেকে ফ্লোটিলাটি ১০ জানুয়ারি যাত্রা শুরু করবে এবং দুই সপ্তাহ পর দেশে ফিরবে। মালয়েশিয়ান কলসালটেটিভ কাউন্সিল অব ইসলাম অর্গানাইজেশনসহ (মাপিম) বেশ কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা এ ফ্লোটিলার আয়োজন করেছে।
মাপিমের মহাসচিব জুলহানিস জয়নল বলেন, ফ্লোটিলাটি তিনটি পরিস্থিতির মুখে পড়তে পারে। ফ্লোটিলা থেকে ত্রাণসামগ্রী সরবরাহের অনুমতি দেয়া হতে পারে, ফ্লোটিলাকে মায়ানমার জলসীমায় ফেরত পাঠানো হতে পারে অথবা মায়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী ফ্লোটিলাকে আক্রমণ করতে পারে (যেমন গাজামুখী তুর্কি ফ্লোটিলায় ২০১০ সালে আক্রমণ করে ৯ জনকে হত্যা করে ইহুদিবাদী ইসরাইল)।
তিনি বলেন, ফ্লোটিলার মূল উদ্দেশ্য মায়ানমারের মং- দ এবং বুথিডং শহরের রোহিঙ্গাদের সাহায্য করা। রাখাইন রাজ্যকেও গাজার মতো অবরুদ্ধ করে রেখেছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। সেখানে কোনো সাংবাদিক, ত্রাণকর্মী কিংবা বিদেশীকে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। কার্যত বাকি বিশ্ব থেকে রাখাইন এখন বিচ্ছিন্ন।
জুলহানিস জানান, ফ্লোটিলায় এনজিও সদস্য, গণমাধ্যম কর্মী, চিকিৎসক, সাবেক মন্ত্রী ও রাজনীতিক, ধর্মীয় নেতা, স্বেচ্ছসেবক ও ক্রুসহ ২০০ লোক অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা হত্যাযজ্ঞকে গণহত্যা বলে মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক। এ নিয়ে মায়ানমারের সরকারের সঙ্গে দেশটির কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে ৫৫ হাজার রোহিঙ্গা অবস্থান করছে। রোহিঙ্গা নিপীড়নের বিরুদ্ধে এবার সবচেয়ে সোচ্চার ভূমিকা রেখেছে সম্পদশালী মালয়েশিয়া।
এদিকে বাংলাদেশে সম্প্রতি আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের জন্য ২ কোটি ৪৯ লাখ ৪১ হাজার ৩৮২ টাকার মানবিক সাহায্য দেয়ার ঘোষণা করেছে ইউরোপীয় কমিশন। মায়ানমার থেকে পালিয়ে এসে কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়া ৭৫০০ রোহিঙ্গা এ অর্থের মাধ্যমে সরকারিভাবে উপকৃত হবেন বলে বুধবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে ইইউ।
উল্লেখ্য, ৯ অক্টোবর মায়ানমারের পুলিশ ফাঁড়িতে হামলায় ৯ পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার পর থেকে রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর চরম নিপীড়ন শুরু করেছে মায়ানমারের সেনাবাহিনী। এ সময় শত শত রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণ করা হয়েছে বহু নারীকে। জীবন ও সম্ভ্রম বাঁচাতে অন্তত ৩৪ হাজার রোহিঙ্গা দেশ ত্যাগ করেছে।