রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দিন : বান কি মুন

Ban kiসংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর অত্যাচার-নিপীড়নের ব্যাপারে মিয়ানমারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন। বিশ্বের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য জাতি’ হতে হলে মুসলমানদের ওপর বৌদ্ধদের হামলা মিয়ানমারকে অবশ্যই বন্ধ করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। তিনি রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব দেয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।
গত বছর রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সংখ্যালঘু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকদের হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয় এবং প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার জন ঘরছাড়া হয়। সাম্প্রদায়িক এ দাঙ্গা মিয়ানমারের রাজনৈতিক সংস্কারে বড় ধরনের ব্যর্থতা হিসেবে বিশ্ববাসীর কাছে উপস্থাপিত হয়।
বান কি মুন বলেছেন, রোহিঙ্গা/মুসলমানদের নাগরিকত্বের দাবিসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের দুর্দশা নিরসনে মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার ‘গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস অন মিয়ানমার’ ভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর রাষ্ট্রদূতের এক বৈঠকে মুন বলেন, মিয়ানমার সংখ্যালঘুদের সঙ্গে বিদ্যমান সমস্যা মেটাতে ব্যর্থ হলে তা সংস্কার প্রক্রিয়াকে খাটো করবে এবং আঞ্চলিক নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াকে উসকে দিবে।
‘গ্রুপ অব ফ্রেন্ডস অন মিয়ানমার’ ভুক্ত রাষ্ট্রগুলো হলো- অস্ট্রেলিয়া, চীন, ফ্রান্স, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, জাপান, নরওয়ে, রাশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ভিয়েতনাম এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রেসিডেন্টের দায়িত্বপালনকারী দেশ। চলতি বছর ইইউর প্রেসিডেন্ট দেশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে লিথুয়ানিয়া
১৯৮২ সালে মিয়ানমার একটি আইন পাস। ওই আইনে দেশটির ৮ সম্প্রদায় ও ১৩০টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়। কিন্তু সেই সময়ের ৬ কোটি জনসংখ্যার ৮ লাখ রোহিঙ্গাকে নাগরিকত্ব দেয়া হয়নি।
মিয়ানমারের অধিকাংশ বৌদ্ধের ধারণা, ব্রিটিশদের উপনিবেশ থাকার সময় মিয়ানমারে (ওই সময় বার্মা নামে পরিচিত) অন্য কোন দেশ থেকে এসে বসবাস শুরু করে।
চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী রাখাইন রাজ্যের দুটি শহরে রোহিঙ্গা মুসলমানদের সন্তান নেয়ার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে একটি আইন করে মিয়ানমার সরকার। ওই আইনে শহর দুটির মুসলমানদের দুয়ের বেশি সন্তান গ্রহণকে অপরাধ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এ আইন কোনো বৌদ্ধের প্রতি কার্যকর হবে না।
মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী ও শান্তিতে নোবেল পুরস্কারজয়ী অং সান সু চি এ আইনের সমালোচনা করেছেন।
বিভিন্ন মানবাধিকার গোষ্ঠীও আইনটির সমালোচনা করেছে।
এদিকে গত মার্চে সাম্প্রদায়িক হামলার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০ জনের বেশি বৌদ্ধকে কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমার সরকার। শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ও আইনজীবীরা বিষয়টি জানিয়েছে।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গায় সরাসরি জড়িত থাকায় এই প্রথম মিয়ানমারের সংখ্যাগুরু বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সদস্যদের শাস্তি দেয়া হলো।
এর আগে গত বছর সূত্রপাত হওয়া দাঙ্গায় সরকার যাদের শাস্তি দিয়েছিল তাদের অধিকাংশই মুসলমান।
মিয়ানমার সরকারের পক্ষপাতমূলক আচরণে কঠোর সমালোচনা করে মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button