ফুরিয়ে আসছে ডেস্কটপ-ল্যাপটপের দিন
বর্তমানে পিসি (পার্সোনাল কম্পিউটার) শিল্পের সার্বিক অবস্থা খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনার এর তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী ২০১৬ সালের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সকল ধরনের পার্সোনাল কম্পিউটার (ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপ কম্পিউটার) বিক্রির হার ৫.৭ শতাংশ (টাকা অংকে তা ৬৮৯ মিলিয়ন ডলার) কমে গেছে।
গার্টনারের একজন বিশ্লেষক মিকাকো কিটাগাওয়া এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বর্তমানে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোক্তাদের মাঝে ‘ব্যক্তিগত কম্পিউটার’ কোনো চাহিদাই নেই। তারা এখন আর তাদের ব্যবহৃত পিসি ডিভাইসগুলোর নতুন সংস্করণ কিনতে খুব একটা প্রয়োজন বোধ করে না। কেউ কেউ তো কখনই পুরোনো পিসির বদলে নতুন পিসি কিনতে আগ্রহী নয়।
স্মার্টফোনের সহজলভ্যতাই ‘ব্যক্তিগত কম্পিউটার’ এর এই ক্ষয়ীষ্ণু অবস্থার পিছনে দায়ী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সময়ের বিবর্তনে স্মার্টফোন এখন যথেষ্ট শক্তিশালী হয়েছে এবং এর আপগ্রেড সংস্করণের কারণে ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপ কম্পিউটার প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।
এছাড়াও ট্যাবলেট পিসির সক্ষমতাও এখন অনেক বেড়েছে। অ্যাপল তাদের ল্যাপটপের টেকসই প্রতিস্থাপন হিসেবে আইপ্যাড প্রো লাইন এর ওপর জোড় দিচ্ছে।
ইন্টারন্যাশনাল ডেটা করপোরেশনের (আইডিসি) তথ্যমতে, বাড়িতে ব্যবহারের জন্য পিসির বাজার ক্রমাগত কমছে। প্রতিদিনের কাজে ব্যবহারের জন্য নয়, বরং ডেস্কটপ ও ল্যাপটপ দিন দিন পেশাদারদের কম্পিউটার হয়ে যাচ্ছে। পেশাদার ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করেই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। দামও সেভাবেই নির্ধারণ করা হচ্ছে। সুতরাং নিত্যদিনের কাজ সারতে কে কিনবে এই মহামূল্য কম্পিউটার?
পিসি নির্মাতা কোম্পানিগুলো বর্তমানে অনেক বেশি চাপে রয়েছে। এইচপি, ডেল এবং আসুস এর মতো কোম্পানিগুলোর বার্ষিক আয় বৃদ্ধির হার একক অঙ্কের কোটায় এসে দাড়িয়েছে। অন্যদিকে এসার, অ্যাপেল এবং লেনোভোর মতো কোম্পানিগুলোর পিসি বিলীন এর পথে। অবশিষ্ট পিসি নির্মাতা কোম্পানিগুলোর বিক্রিও ১৬ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। ডেস্কটপ-ল্যাপটপ কম্পিউটারের দিন কি তাহলে ফুরিয়ে আসল?