বিল পাস নিয়ে কংগ্রেসম্যানদের প্রকাশ্য বিরোধ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সিরিয়ায় আগ্রাসন চালানোর জন্য কংগ্রেসের কাছে যে অনুমোদন চেয়েছেন সে ব্যাপারে প্রকাশ্য মতবিরোধে জড়িয়ে পড়েছেন কংগ্রেস সদস্যরা। মার্কিন প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে রোববার কংগ্রেসম্যানদের গোপনে ব্রিফিং দেয়ার পর এ বিতর্কে জড়ালেন তারা।
মার্কিন কংগ্রেসে বর্তমানে চলছে গ্রীষ্মকালীন ছুটি। ছুটি শেষে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর এটির পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন বসবে। তবে রোববার বিকেলে ওয়াশিংটনে অবস্থানরত প্রায় ১০০ কংগ্রেস সদস্যকে ডেকে সিরিয়া হামলার পরিকল্পনা জানায় ওবামা প্রশাসন।
ওই গোপন বৈঠকের পর কযেকজন মার্কিন আইন প্রণেতা বলেন, সিরিয়ায় যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে সে বিষয়টি তারা মেনে নিয়েছেন। কিন্তু এই অজুহাতে দেশটিতে আগ্রাসন চালানো যাবে কি-না তা নিয়ে তাদের সংশয় রয়েছে।
খোদ প্রেসিডেন্ট ওবামার দল ডেমোক্র্যাট পার্টির কংগ্রেস সদস্য জ্যানিস হ্যান বলেছেন, এটি কি যুদ্ধে যাওয়ার আদৌ কোনো কারণ হতে পারে? কী কারণে যুদ্ধে যাওয়া উচিত? আমরা আমাদের প্রেসিডেন্টকে কিসের ম্যান্ডেট দিতে যাচ্ছি?
হ্যান বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাকি কোনো পদক্ষেপ নেয়া উচিত নয়। তিনি প্রশ্ন তোলেন, রাসায়নিক হামলা যদি এত জঘন্য ও ঘৃণিত কাজ হয়ে থাকে তাহলে আন্তর্জাতিক সমাজ নীরব কেন?
রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান স্কট রিগেল সিরিয়ায় হামলার প্রশ্নে আইন প্রণেতাদের স্মরণাপন্ন হওয়ায় প্রেসিডেন্ট ওবামার প্রশংসা করেছেন। তবে তিনি বলেছেন, তিনি কংগ্রেসের ভোটাভুটিতে ‘না’ ভোট দেবেন। কারণ, কেন ও কীভাবে এ অভিযান সম্পন্ন হবে তা এখনো তার কাছে পরিষ্কার নয়।
অন্যদিকে প্রতিনিধি পরিষদের ডেমোক্র্যাট সদস্য স্যান্ডি লেভিন সিরিয়ায় সামরিক আগ্রাসনের পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমরা ‘না’ ভোট দিলে তাতে সিরিয়াকে ভুল বার্তা পাঠানো হবে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সাত-পাঁচ না ভেবে হঠাত করে সিরিয়ায় হামলা চালানোর হুমকি দিয়ে যে ভুল করেছেন তা থেকে সম্মানজনক উপায়ে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এ সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে ওবামা বিষয়টিকে কংগ্রেসে পাঠিয়েছেন।
আর এখন কংগ্রেস সদস্যরা বিলটি পাস না করার ক্ষেত্র সৃষ্টির জন্য প্রকাশ্যে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন। বিশ্লেষকরা আরো বলছেন, সিরিয়া হামলার বিল কংগ্রেসে পাস হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে মার্কিন আইন প্রণেতারা কখনোই এ নিয়ে বিতর্কে জড়াতেন না।