জি-সেভেন বৈঠকে ব্রিটেনের রুশ-বিরোধী নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব বাতিল
রাশিয়ার ওপর আরো কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্যে ব্রিটেনের দেয়া প্রস্তাব শিল্পোন্নত সাতটি দেশের জোট জি-সেভেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নাকচ করে দিয়েছেন।
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের কাছ থেকে রাশিয়াকে দূরে সরিয়ে নেওয়ার কৌশল হিসেবে ব্রিটেন এই প্রস্তাব দিয়েছিলো।
ইতালির লুক্কা শহরে জি-সেভেনের এই সম্মেলনে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রাশিয়াকে এক কোণায় ঠেলে দেওয়ার পরিবর্তে সংলাপের ওপরেই বেশি জোর দিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন বলেছেন, আসাদ পরিবারের ক্ষমতা প্রায় শেষ হওয়ার পথে।
ক্রাইমিয়া দখলের পর থেকে রাশিয়ার ওপর পশ্চিমা দেশগুলো বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেগুলো এখনো বহাল রয়েছে। এখন ব্রিটেনের পক্ষ থেকে নতুন কিছু নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছিলো জি-৭ এর বৈঠকে। প্রধানত রাশিয়া এবং সিরিয়ার নেতৃস্থানীয় কিছু সামরিক কর্মকর্তাকে টার্গেট করার প্রস্তাব করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল রাশিয়া যেন প্রেসিডেন্ট আসাদের ওপর থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করে। কিন্তু এখন স্বীকার করা হচ্ছে নতুন এই নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে বৈঠকে ঐক্যমত্য হয়নি।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলিনো আলফানো এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাশিয়ার সাথে অবশ্যই আলাপ আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে এবং রাশিয়াকে কোণঠাসা করা কোনোভাবেই উচিৎ হবেনা।
তিনি আরো বলেন, আসাদের ওপর চাপ দেয়ার ক্ষমতা রাশানদের রয়েছে এবং যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি সিরিয়া যেন মেনে চলে এটি রাশিয়া নিশ্চিত করতে পারে।
আমেরিকা নতুন নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবে কতটা উৎসাহী ছিল তা পরিষ্কার নয়।।
তবে বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসন মন্তব্য করেন, প্রেসিডেন্ট আসাদের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখা নিয়ে রাশিয়াকে গভীরভাবে ভাবতে হবে।
ইতালিতে সম্মেলন শেষে মি. টিলারসন রাশিয়ায় এক সফরে মস্কো এসে পৌঁছেছেন।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এই বার্তাই তিনি রাশিয়ার সরকারকে দেবেন তারা যেন আসাদের ওপর থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে, যাতে সিরিয়াতে একটি রাজনৈতিক মীমাংসায় পৌঁছানো সহজ হয়।
তবে রাশিয়া তাতে কতটা কান দেবে তা নিয়ে ঘোর সন্দেহ রয়েছে।
এমনিতেই সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা নিয়ে চরম খাপ্পা প্রেসিডেন্ট পুতিন।
মস্কো থেকে বিবিসির স্টিভেন রোজেনবার্গ জানাচ্ছেন, অভিজ্ঞতা বলে রাশানদের হুমকি দিয়ে খুব কাজ হয় না।
মি. টিলারসন যদি মনে করেন, তিনি প্রেসিডেন্ট আসাদের ওপর মস্কোর সমর্থন দুর্বল করতে পারবেন, সে আশায় গুড়ে বালি হতে পারে।
স্টিভেন রোজেনবার্গ বলছেন, সিরিয়ান প্রেসিডেন্ট মধ্যপ্রাচ্যে রাশিয়ার মুখ্য সামরিক মিত্র এবং তাকে ক্ষমতায় রাখতে রাশিয়া সামরিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক দিয়ে অনেক কাঠখড় পুড়িয়েছে।
ফলে আমেরিকার কথায় মি. আসাদকে রাশিয়া ছুঁড়ে ফেলবে সেই সম্ভাবনা খুবই কম। -বিবিসি