বৈশ্বিক ব্যাংক ব্যবস্থা হ্যাক করেছে যুক্তরাষ্ট্র
সুইফটের বৈশ্বিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা অনলাইন নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেদ করে অনুপ্রবেশ করার ‘টুল’ অনলাইনে ফাঁস করে দিয়েছে হ্যাকাররা। কালোবাজারে এই ‘টুল’ ২০ লাখ ডলারের বেশি দামে বিক্রি করা যেত বলে জানিয়েছেন নিরাপত্তা গবেষকরা। বলা হচ্ছে, মার্কিন নজরদারিমূলক সরকারি সংস্থা এনএসএ এই টুল তৈরি করেছে। ফাঁস করা নথিপত্রে সুইফটের বৈশ্বিক ব্যাংকিং সিস্টেমে সম্ভাব্য অনুপ্রবেশ হয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলছে। গবেষকরা বলছেন, এই অনুপ্রবেশ সম্পন্ন হলে, বৈশ্বিক আর্থিক লেনদেনের ওপর গোপনভাবে নজরদারি করতে পারতো যুক্তরাষ্ট্র। এ খবর দিয়েছে বিবিসি। খবরে বলা হয়, এর আগেও সুইফট হ্যাক হয়েছে। হ্যাকাররা সুইফট সিস্টেমে অনুপ্রবেশ করেই বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একাউন্ট থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার চুরি করেছে।
উল্লেখ্য, এনএসএ’র টুল অনলাইনে ফাঁস করে দিয়েছে শ্যাডো ব্রোকার্স নামে একটি হ্যাকিং গ্রুপ। এর আগে ম্যালওয়্যার ফাঁস করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। তাদের দাবি সত্য হলে, এটি ২০১৩ সালে এডওয়ার্ড স্নোডেনের কাহিনীর পর এনএসএ’র সবচেয়ে বড় তথ্যফাঁসের নজির। স্নোডেন নিজেও টুইটারে বলেছেন, এটি ‘মাদার অব অল এক্সপ্লয়েটস’ (সব প্রতারণার জনক)। একাধিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, ফাঁস করা তথ্য বিশ্বাসযোগ্য। তবে যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে তারা এই দাবি উড়িয়ে দিয়েছে, কিংবা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। বেলজিয়ামভিত্তিক সুইফট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ‘আমাদের নেটওয়ার্ক বা মেসেজিং সার্ভিসে অনুপ্রবেশ ঘটেছে এমন কোনো প্রমাণ আমাদের কাছে নেই।’ এনএসএ কোনো মন্তব্য করেনি। সুইফট এমন একটি নেটওয়ার্ক যার মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে ব্যাংকগুলো অর্থ আদান-প্রদান করে থাকে। ফাঁস হওয়া নথিপত্র অনুযায়ী, ‘ইস্টনেটস’ নামে অন্তত একটি বড় ব্যাংকে অনুপ্রবেশ হয়ে থাকতে পারে। ইস্টনেটের সদরদপ্তর দুবাইয়ে স্থাপিত হলেও কুয়েত, দুবাই, বাহরাইন, জর্ডান, ইয়েমেন ও কাতারে এর গ্রাহক রয়েছে। সফটওয়্যার কোম্পানি টিনেবল নেটওয়ার্ক সিকিউরিটির একজন নিরাপত্তা গবেষক ক্রিস থমাস ফাঁস হওয়া তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করে বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা না থাকলেও, এর ওপর নজরদারির ক্ষমতা ছিল।’