টাওয়ার হ্যামলেটসে ইডিএলের মার্চ প্রতিরোধে ১৫ হাজার মানুষের সমাবেশের প্রস্তুতি
টাওয়ার হ্যামলেটসে ইডিএল প্রস্তাবিত মার্চ প্রতিরোধে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়ে ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ বলেছেন, টাওয়ার হ্যামলেটস শান্তিকামী মানুষের আবাসস্থল। এখানে কোনো ধরনের হিংসাত্মক কর্মকান্ডের প্রশ্রয় দেয়া হবেনা।
শুক্রবার দুপুরে বর্ণবাদ বিরোধী সংগঠন ইউনাইটেড ইস্টএন্ড এর উদ্যোগে লন্ডন মুসলিম সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ আহবান জানানো হয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন ধর্মের নেতৃবৃন্দ কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেন, টাওয়ার হ্যামলেটসের আশপাশেও ইডিএলকে আসার সুযোগ দেয়া হবেনা। আমরা সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ অত্যন্ত শান্তিপুর্ণভাবে এই বারায় বসবাস করছি। বাইরে থেকে কেউ এসে আমাদের শান্তি বিঘ্ন করার কোনো অধিকার নেই। নেতৃবৃন্দ ১১ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টায় সকলকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রতিরোধ কর্মসূচিতে অংশগ্রহনের আহবান জানান। নেতৃবৃন্দ সমাবেশে প্রায় ১৫ হাজার লোকের সমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
ইউনাইটেড ইস্ট এন্ড এর চেয়ার গ্লীন রভিন্স এর সভাপতিত্বে ও পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হ্যামলেটস ইন্টারফেইথ ফোরামের চেয়ার ফাদার এলান গ্রীন, টাওয়ার হ্যামলেটস লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার কাউন্সিলার রেইচল স্যান্ডার্স, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের লীড মেম্বার ফর কালচার কাউন্সিলার রানিয়া খান, ইস্ট লন্ডন মসজিদ ও লন্ডন মুসলিম সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক দেলওয়ার হোসেইন খান, ইস্ট লন্ডন সেন্ট্রাল সিনাগগের চেয়ার লিওন সিলভার, ইসলামিক ফোরাম ইউরোপের মিডিয়া সেক্রেটারী আবদুল্লাহ ফলিক ও ইউনাইট এগেইনস্ট ফ্যাসিজমের জয়েন্ট সেক্রেটারী ওয়েম্যান বেনেট।
ফাদার এলান জনসন বলেন, ১৫ বছর ধরে টাওয়ার হ্যামলেটসে মুসলিম কমিউনিটির সাথে বসবাস করছি। আমাদের পারস্পারিক সম্পর্ক বন্ধুত্বসুলভ। আমাদের মধ্যে কখনো কোনো বিভেদ সৃষ্টি হয়নি। এখন ইডিএল আসছে আমাদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে। তারা বাইরে থেকে টাওয়ার হ্যামলেটস আসছে। এখানকার কমিউনিটি সম্পর্কে তাদের ন্যুনতম কোনো ধারণা নেই। তিনি বলেন, ইস্ট লন্ডন মসজিদ আমার মসজিদ। এটি কমিউনিটির মসজিদ। ইডিএল এই মসজিদের কাছাকাছি আসার চেষ্টা করলে তাদের প্রতিরোধ করতে শুধু পুলিশই প্রস্তুত থাকবেনা, প্রস্তুত থাকবে সকল ফেইথের মানুষ। তিনি বলেন, ইডিএল এর ইসলাম বিরোধী ততপরতা শুধু মুসলমানদের সমস্যা নয়, এটি গোটা কমিউনিটির সমস্যা। সুতরাং সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করতে হবে।
দেলওয়ার হোসেইন খান বলেন, মুসলিম কমিউনিটি কোনো ইমিগ্রান্ট কমিউনিটি নয়। অনেক মুসলমানই জন্মগতভাবে বৃটিশ। মুসলমানদের এখানে শত বছরের ইতিহাস রয়েছে। আমরা দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের মুসলিম এ দেশে বসবাস করছি। বৃটেন আমাদের দেশ। আমরা এখান থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রশ্নই আসেনা। বৃটেন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার দাবী সম্পুর্ণ অযৌক্তিক। ইডিএল হচ্ছে কতিপয় উগ্রপন্থি গ্রুপ। তারা বৃটেনের ইংলিশ কমিউনিটির প্রতিনিধিত্ব করেনা।
কাউন্সিলার রানিয়া খান বলেন, বৃটিশ সেনা হত্যাকান্ডের পর মুসলিম মহিলারা বিভিন্ন এলাকায় হুমকীর মুখে পড়লেও আমাদের টাওয়ার হ্যামলেটসে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। এর একমাত্র কারণ আমাদের কমিউনিটি কোহিশন। তিনি বলেন, ইডিএলকে আর আন্ডারমাইন্ড করা যাবেনা। তাদের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং প্রায় একশ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের প্রতিরোধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
লিওস সিলভার বলেন, ইডিএল আমাদের বন্ধুত্বপুর্ণ সম্পর্ক নষ্ট করতে চায়। তাদেরকে কিছুতেই সহ্য করা হবেনা।