পারমাণবিক হামলা থেকে রক্ষা পেতে ব্রিটেনে ভূগর্ভস্থ গোপন শহর
পারমাণবিক হামলা হলে ব্রিটেনে মাটির নিচে এক গোপন শহর গড়ে তোলা হয়েছে যেখানে বেকারি, টেলিফোন ও বিদ্যুৎ সহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা রয়েছে। ওই গোপন শহরের সাংকেতিক নাম দেওয়া হয়েছে বার্লিংটন। ব্রিটেনের উইল্টশায়ারের কোর্সহ্যাম শহরে মাটির ১’শ ফুট নিচে এ গোপন শহরটি অবস্থিত। ওই স্থানটি বাথ থেকে বেশি দূরে নয়। পারমাণবিক হামলা চালালে ব্রিটেনের সরকার জরুরিভাবে ওই শহর থেকে দেশ পরিচালনা করবে।
১৯৫০ সালে নির্মিত ওই বাঙ্কারটিতে হাসপাতাল, ক্যান্টিন, কিচেন, লন্ড্রি, প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার মত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। জরুরিভাবে সরকার পরিচালনার মত প্রয়োজনীয় লোকবল যাতে বসবাস করতে পারে সে ব্যবস্থাও রয়েছে। ২৪০ একর জমিতে এধরনের বাঙ্কার শেষ পর্যন্ত পরিত্যক্তই ছিল। সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড ম্যাকমিলান যিনি দেশটির রাজপরিবারের একজন সদস্য ছিলেন তার ইচ্ছেতেই ওই বাঙ্কারটি তৈরি করা হয়েছিল।
তবে অব্যবহৃত এ বাঙ্কারটি এখন গোপন শহর হিসেবে ব্যবহার হতে পারে কি না সে সম্পর্কে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
পানি ও শৌচাগার সহ বিবিধ ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে। মাটির নিচে ওই শহরটিতে রয়েছে ৬০ মাইলের বেশি ভূগর্ভস্থ সড়ক, একটি হ্রদ ও বেকারি। এমনকি এখনো সেখানে অনেক টেলিফোন সেট রয়েছে যা ব্যবহৃত হয়নি।
গোপন ওই শহরটিতে তাপমাত্রা ২০ডিগ্রি সেলসিয়ার রাখার জন্যে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়নের ঠান্ডা যুদ্ধের এক পর্যায়ে এধরনের গোপন শহর তৈরির বাস্তবতা উপলব্ধি করে তখনকার ব্রিটিশ সরকার। ১৯৫৫ সালে সাবেক ব্রিটিশ সরকার আশঙ্কা করে দেশটি আক্রান্ত হলে অন্তত ১৩৫টি পারমাণবিক বোমা হামলার শিকার হতে পারে। আর লন্ডন শহরেই পড়তে পারে ৩৫টি পারমাণবিক বোমা। এসব বোমা হামলায় ১৭ লাখ মানুষ মারা যেতে পারে এবং আরো ১০ লাখ মানুষ আহত হওয়ার আশঙ্কা করা হয়।
গোপন শহরে বিবিসি’র জন্যে একটি কার্যালয় ছিল। ১৯৯১ সাল পর্যন্ত এ গোপন শহরটির রক্ষণাবেক্ষণ করার পর তা এক পর্যায়ে বেশ ব্যয়বহুল হয়ে ওঠে এবং ২০০৪ সালের শেষ দিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।