নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের বড় জয়
বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিংয়ে ওপেন করতে নামেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তবে প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে জিতেন প্যাটেলকে মারতে গিয়ে আউট হন সৌম্য।
সৌম্য দ্রুত বিদায় নিলেও দারুণ ব্যাটিং করে যান তামিম ইকবাল ও সাব্বির রহমান। তাদের ব্যাটিংয়ের ওপর ভর করে ১৮.৩ ওভারে দলীয় শতক পূর্ণ হয় বাংলাদেশের। ক্যারিয়ারের ৩৬তম অর্ধশতকের দেখা পান তামিম।পরে তামিম-সাব্বির জুটিতেও শত রান আসে।
প্রথম বলেই ছক্কা মেরে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেন তামিম। তবে তৃতীয় বলে সৌম্যকে আউট করেন জিতান প্যাটেল। নিজের প্রথম বলে কোরি অ্যান্ডারসনকে ক্যাচ দেন তিনি। এর পর তামিমকে উপযুক্ত সঙ্গ দেন সাব্বির। দুজনে বেশ দেখেশুনে ব্যাটিং করছিলেন। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের দিন ৪৭ রানে আউট হওয়া তামিম ক্যারিয়ারের ৩৬তম হাফসেঞ্চুরি পান ৫৩ বল খেলে। সাব্বির তাকে অনুসরণ করে ৬৪ বলে পঞ্চম হাফসেঞ্চুরি হাঁকান।
কিন্তু তাদের ১৩৬ রানের জুটি ভাঙে তামিম ৬৫ রানে স্যান্টনারের শিকার হলে। এক ওভার পেরোতেই রান আউট হন সাব্বির, তিনিও করেন ৬৫ রান। পরের ওভারে মোসাদ্দেককে (১০) এলবিডব্লিউ করে নিজের দ্বিতীয় শিকার বানান প্যাটেল। এর পর মুশফিককে নিয়ে অর্ধশতরানের জুটি গড়ার পথে ছিলেন সাকিব। কিন্তু সফল হননি বড় ইনিংস গড়তে। ৩৯ রানের জুটি গড়ে তিনি ফেরেন হামিশ বেনেটের বলে।
এর আগে ব্যাটিংয়ে নেমে বড় স্কোরের আভাস দিলেও নিউজিল্যান্ড খুব বেশিদূর এগোতে পারেনি। বাংলাদেশের বোলাররা দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়েছে। প্রথমে নাসির হোসেন, এর পর সাকিব ও মাশরাফি মুর্তজার জোড়া আঘাতে প্রতিপক্ষকে ৮ উইকেটে ২৭০ রানে বেধে দেয় বাংলাদেশ।
ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপা আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই নিশ্চিত করেছিল নিউজিল্যান্ড। বুধবার শেষ ম্যাচটি তাদের জন্য আনুষ্ঠানিকতার হলেও বাংলাদেশের জন্য র্যাংকিংয়ের ছয় নম্বরে ওঠার মিশন এটি। তাই গুরুত্ব দিয়েই মাঠে নামেন মাশরাফিরা।
টস জিতে বাংলাদেশ নেয় ফিল্ডিং। শুরুটা হয় মোস্তাফিজুর রহমানের উইকেট উদযাপন দিয়ে। চতুর্থ ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন বাঁহাতি পেসার। লুক রঞ্চিকে মাত্র ২ রানে সাকিবের ক্যাচ বানান আগের ম্যাচসেরা বোলার। তবে আরও আগেই উইকেট পেতে পারত বাংলাদেশ। ইনিংসের তৃতীয় বলে টম ল্যাথামের উইকেট পেয়ে যেতেন মাশরাফি, কিন্তু দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা নাসির স্কয়ার লেগে ক্যাচ ছেড়ে দেন। ১৫তম ওভারে আরেকবার জীবন পান ল্যাথাম। মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে জীবন পাওয়ার আগের বলে হাফসেঞ্চুরি করেন এ ওপেনার। নাইল ব্রুমের সঙ্গে ১৩৩ রানের জুটি গড়েন ল্যাথাম। আরও ওই জুটিতেই স্কোরবোর্ড শক্তিশালী করার আভাস দেয় সিরিজের চ্যাম্পিয়নরা।
অবশেষে তাদের দুজনকে পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে ম্যাচে গতি ফেরান নাসির। ল্যাথামকে সেঞ্চুরি করতে দেননি তিনি। ৮৪ রানে তাকে বোল্ড করেন বাংলাদেশি অলরাউন্ডার। তবে তার আগে ৬৩ রানে ব্রুমকে ফেরান নাসির। দুই বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফিরলেও রস টেলর ও কোরি অ্যান্ডারসনের ব্যাটে পথে ফিরছিল নিউজিল্যান্ড। বেশিক্ষণ তাদের থিঁতু হতে দেয়নি বাংলাদেশ।
দলীয় ২০৮ রানে সাকিবের আঘাত বড় ধাক্কা দেয় নিউজিল্যান্ডকে। অ্যান্ডারসনকে ২৪ রানে মাহমুদউল্লাহর ক্যাচ বানান এ অলরাউন্ডার। ম্যাচের মোড় বাংলাদেশের দিকে আরও ঘুরে যায় কিউইরা পরপর তিন ওভারে ৩ উইকেট হারালে। মাশরাফি তার দুই ওভারে জিমি নিশাম ও কলিন মুনরোকে ক্রিজ থেকে বিদায় করেন। মাঝের ওভারে সাকিব তার দ্বিতীয় উইকেট তুলে নেন মিচেল স্যান্টনারকে বোল্ড করে।
রানের গতি তখন থেকে মন্থর হয়ে যায় কিউইদের। তিন ফিফটি সত্ত্বেও তিনশ পেরোতে পারেনি তারা। রুবেল হোসেনের কাছে অষ্টম উইকেটের পতন ঘটে ২ ওভার বাকি থাকতে। এ পেসার বোল্ড করেন ম্যাট হেনরিকে। ৫৬ বলে ৬০ রান করেছিলেন টেলর। তবে তার নামের পাশে অপরাজিত নাও থাকতে পারত। একপ্রান্ত আগলে রেখে হাফসেঞ্চুরি করা এ ব্যাটসম্যানকে শিকার করতে পারতেন রুবেল।