কারাগারে আত্মজীবনী লিখছেন সাঈদী
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারাগারে বসে আত্মজীবনী লিখছেন। কাশিমপুর কারাগারে বসে সাঈদী পবিত্র কোরআনের তাফসির থেকে শুরু করে তার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলা এবং ফাঁসির রায়সহ নানা বিষয়ে নিয়ে লিখছেন বলে জানান তার সেজো ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী।
সাঈদীর ছেলে বলেন, ছয় মাস ধরে কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে কঠিন সময় পার করছেন আমার বাবা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার বেশিরভাগ সময়ই কাটছে খুবই ছোট একটি কক্ষে। মাসুদ সাঈদী বলেন, প্রায় সবসময়ই আমার বাবা পবিত্র কোরআন অধ্যায়ন করছেন, বাকী সময় লিখছেন তার জীবনের অভিজ্ঞতা। অনেকটা আত্মজীবনী টাইপ রচনায় নিজের জীবনের বয়ান লিখছেন তিনি। সাঈদীর ছেলে বলেন, কোরআনের তাফসির করা থেকে শুরু করে তাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় জড়ানো এবং তার বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদন্ডের রায় সম্পর্কে তার সে লেখায় আলোচ্য বিষয়। তিনি বলেন, বেশিরভাগ সময় কনডেমে সেলে কাটালেও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অল্পকিছু সময় সেলের বাইরে তাকে হাঁটতে দেয়া হয়।
মাসুদ সাঈদী বলেন, আমার বাবা দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে ডায়বেটিস রোগে ভুগছেন। এজন্য কিছুটা সময় তাকে হাঁটার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে মাসে এক বার দেখা করার সুযোগ রয়েছে সাঈদীর। পরিবারের সঙ্গে তার সর্বশেষ দেখা হয়েছে গত ঈদের সময়। তিনি বলেন, আমার পিতা অধীর আগ্রহে আমাদের সঙ্গে দেখা করার দিনটির অপেক্ষায় চেয়ে থাকেন। বাবা সম্পর্কে ছেলে বলেন, তবে তিনি জীবন মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত নন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি তার অগাদ আস্থা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, শহীদী মৃত্যুর চেয়ে সম্মানের এবং সুখের আর কোন মৃত্যু নেই।
উল্লেখ্য এর আগে বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর দায়ের করা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একটি মামলায় সাঈদীকে ২০১০ সালের ২৯শে জুন গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত বছরের ১১ই জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ১৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শেষে ৩ অক্টোবর সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাঈদীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করে সাঈদীর আইনজীবীরা।