ওয়েস্ট লন্ডনের ২৭ তলা ভবনে ভয়াবহ আগুন, বহু হতাহতের আশঙ্কা

londonfireপশ্চিম লন্ডনে লাটিমার রোডের একটি ২৭ তলা ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ব্রিটেনের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাত সোয়া একটার দিকে ল্যানচেস্টারে লাটিমার রোডের ‘গ্রেনফেল টাওয়ার’ নামের ওই আবাসিক ভবনটিতে আগুন লাগে। এখনও সেখানে আগুন জ্বলছে। বুধবার পুরো পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দেন লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের কমিশনার ড্যানি কটন। বিবৃতিতে তিনি জানান, আগুন লাগার খবর পাওয়ার ছয় মিনিটের মাথায় দমকলকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। আগুন নেভাতে এখন সেখানে ফায়ার ব্রিগেডের ২০০ কর্মী নিয়োজিত রয়েছেন। ড্যানি কটন জানান, আগুনের মাত্রা এতো ভয়াবহ যে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল বাহিনী হিমশিম খাচ্ছে। উদ্ধার তৎপরতাও অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছে।
ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণহানির ব্যাপারে বলতে গিয়ে ড্যানি কটন বলেন, আমি অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে এ অগ্নিকাণ্ডে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি হয়েছে। ২৭ তলা এ ভবনটিতে অন্তত ১২০টি ফ্লাট রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে ভবনের আকার ও জটিলতার কারণে এখনই নিহতের সংখ্যা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। তবে ভবনের বাসিন্দাদের নিয়ে স্বজনেরা চিন্তিত, অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। তারা বেঁচে আছে কিনা সে বিষয়ে জানতে চাইছেন অনেকে।
এর আগে লন্ডন ফায়ার ব্রিগেডের অ্যাসিস্টেন্ট কমিশনার ডেন ডেলি বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ। এমন জটিল পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করছেন দমকলকর্মীরা। অনেক বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এটি এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৪০টি ইউনিট ও প্রায় ২০০ দমকলকর্মী।
বিবিসির সাংবাদিক অ্যান্ডি মুর জানান, পুরো ভবনটি আগুনে জ্বলছে এবং ভবনটি ধসে পড়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভবন থেকে ধ্বংসাবশেষ পড়তে দেখছি। আমরা বড় বিস্ফোরণের শব্দও শুনেছি। কাঁচ ভাঙার শব্দও পেয়েছি।
বিবিসির আরেক প্রতিবেদক সাইমন লেডারমেন জানান, ভবনটি যেভাবে জ্বলছে কয়েক মাইল দূর থেকে তা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তারা ছাদের ওপর থেকে আলো নাড়ানো দেখেছে। তাদের ধারণা ভবনের লোকজন ছাদের ওপর থেকে টর্চের আলো দিয়ে সাহায্য চাইছে। আর্তনাদও তারা শুনতে পেয়েছেন। তাদের ভাষ্য অনুযায়ী ছাদে আগুন পৌঁছাতে আর বেশি দেরী নেই।
লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানান, এটা অত্যন্ত গুরুতর ঘটনা। আগুনের কারণে লন্ডন পাতাল রেলের হ্যামারস্মিথ এবং সিটি ও সার্কেল লাইন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জর্জ ক্লার্ক নামের একজন প্রত্যক্ষদর্শী বিবিসি রেডিও ফাইভকে জানিয়েছেন আমার সারা গায়ে ছাই লেগে গেছে। আগুনটা কত ভয়াবহ হতে পারে চিন্তা করুন। আমি প্রায় ১০০ মিটার দূরে এবং পুরোপুরি ছাইয়ে ঢেকে গেছি।
এটা অত্যন্ত মর্মান্তিক ঘটনা। আমি দেখেছি ভবনের উপরের দিকে কেউ টর্চ জ্বালাচ্ছিল। তারা অবশ্যই বের হতে পারেনি। হয়তো তারা বেঁচে নেই।
জডি মার্টিন নামে আরেকজন জানান-প্রথমে আগুন দেখার পর তিনি দৌড়ে ভবনটির কাছে যেয়ে বাসিন্দাদের বের হয়ে আসতে বলেন।
কিন্তু ভবনে আটকে থাকা লোকজন চিৎকার করে বলছিলেন তাদের বাইরে বের হবার উপায় নেই। কারণ করিডোরের ভেতরটা পুরোটা ধোঁয়ায় ভরে গিয়েছিল সে সময়েই।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button