আন্তর্জাতিক ক্বোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী হাফেজের বিশ্বজয়
২১তম দুবাই আন্তর্জাতিক হিফজুল ক্বোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের হাফেজ তরিকুল ইসলাম ১০৩ রাষ্ট্রের প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে প্রথমস্থান অধিকার করেছেন। প্রথম পুরস্কারের জন্য আড়াই লাখ দিরহাম (৫,৪৯২,৫০০টাকা) পান বাংলাদেশী এই কিশোর হাফেজ।
তার পরের স্থান অধিকার করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিযোগী হুজাইফা সিদ্দিকী, তিনি পান দুই লাখ দিরহাম। সেই সাথে তিনি ‘বেস্ট ভয়েস’ ক্যাটাগরিতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেন। তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যৌথভাবে গাম্বিয়ার মোডউই জবি এবং সৌদি আরবের আবদুল আজিজ আল ওবায়দান এবং তিউনিশিয়ার রশিদ আলানি। তারা পুরস্কারের দেড় লাখ দিরহাম ভাগাভাগি করে নেন। অন্যান্য বিজয়ীয়া হলেন, মোহনা আহমেদ (বাহরাইন), মোহাম্মদ হাদি আল-বশির (লিবিয়া), ওমর মাহমুদ সায়েদ আলী সৈয়দ আহমেদ রিফাই (কুয়েত), মোহামমু আবেকা (মৌরিতানিয়া), হাবিনানা মিকিনি (রওয়ানা) এবং মোহামেদ ইসমাইল মোহাম্মদ নাগিব তাহা (মিশর)। এ প্রতিযোগিতায় দশম স্থান পর্যন্ত প্রতিযোগীদের পুরস্কৃত করা হয়েছে।
বৃহষ্পতিবার সংযুক্ত আরব আমিরাতের বাণিজ্যিক রাজধানী দুবাইয়ে প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিত্ব শেখ আহমদ বিন মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম দুবাই সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান সমিতির অডিটোরিয়ামে জাকজমকপূর্ণ এক অনুষ্ঠানে তরিকুল ইসলামসহ অন্যান্য বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। চলতি বছর রোজার প্রথম দিন থেকে এ প্রতিযোগিতা শুরু হয়।
মাত্র ১৩ বছর বয়সী এ হাফেজের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার দাউদকান্দি। তিনি রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর হাফেজ ক্বারী নেছার আহমদ আন নাছিরী পরিচালিত মারকাজুত তাহফিজ ইন্টারন্যাশনাল ক্যাডেট মাদ্রাসার ছাত্র। বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি জাতীয় প্রতিযোগিতায় শীর্ষস্থান অর্জনের পর এ বাংলাদেশি কিশোর দুবাইয়ে ১০৩ রাষ্ট্রের প্রতিযোগীকে পিছনে ফেলে এ কৃতিত্ব দেখালেন। ২০১২ সালে সৌদি আরবে বিশ্ব কুরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের পক্ষে দুটি গ্রুপেই ১ম স্থান অধিকার করেছিলেন হাফেজ তানভির ও সাআদ।
প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ তরিকুল ইসলাম বিশ্বাসই করতে পারেননি নাম ঘোষণার উত্তেজনাময় মুহূর্তে তার নাম উচ্চারিত হবে।
‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না, এটি ঘটেছে। জানতাম যে, আল্লাহর রহমতে আমি ভাল পারফরমেন্স করেছি। ভেবেছিলাম, শীর্ষ পাঁচজনের মধ্যে থাকব। কিন্তু একেবারে শীর্ষ পুরস্কার জেতা পুরাই অবিশ্বাস্য ঘটনা আমার জন্য। এই সাফল্য অর্জনে পিছনে আমার বাবা-মা এবং শিক্ষককে ধন্যবাদ জানাই।’ এভাবে অনুভূতি প্রকাশ করেন ঢাকার এক ইমামের সন্তান তরিকুল। গত বছর তিনি কুরআন মুখস্থ সম্পন্ন করেন, এতে তার মাত্র এক বছর সময় লেগেছে।