ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদন

পুঁজিবাজার উন্নয়ন সূচকের তলানিতে বাংলাদেশ

DSEপ্রতিবেশী ও প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের অবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। বিনিয়োগের জন্য অর্থায়নের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের অংশীদারিত্বে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন ও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদনের অনুযায়ী, পুঁজিবাজার উন্নয়নের সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৯তম। বাংলাদেশ এই সূচকে তলানির দেশগুলোর একটি। বাংলাদেশের ওপরে আছে ভারত, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া, শ্রীলংকা, নেপাল, ভিয়েতনাম ও ভুটান।
সম্প্রতি বাংলাদেশের অর্থনীতি পর্যালোচনায় দেশটির পুঁজিবাজার সম্পর্কে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদনের এসব তথ্য প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। আর্টিকেল ফোর মিশনের আওতায় এই পর্যালোচনা করেছে আইএমএফ।
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজার উন্নয়নের সূচকে প্রতিবেশী ভারতের অবস্থান ৩৮তম (সূচক ৪ দশমিক ৪), ইন্দোনেশিয়া ৪২তম (সূচক ৪ দশমিক ৩), কম্বোডিয়া ৬৩তম (সূচক ৪ দশমিক ১), শ্রীলংকা ৬৪তম (সূচক ৪), নেপাল ৭৩তম (সূচক ৩ দশমিক ৯), ভিয়েতনাম ৭৮তম (সূচক ৩ দশমিক ৯) ও ভুটান ৭৯তম (সূচক ৩ দশমিক ৯)। অপরদিকে বাংলাদেশের অবস্থান ৯৯তম এবং সূচক ৩ দশমিক ৫।
আইএমএফ বলেছে, এখনও প্রতিবেশী ও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশের পুঁজিবাজার তেমন শক্তিশালী নয়। বিনিয়োগের জন্য অর্থায়নের উৎস হিসেবে পুঁজিবাজারের অংশীদারিত্বে মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, শ্রীলংকা, ফিলিপাইন ও ভারতের চেয়ে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। সংস্থাটি বলছে, ২০১১ সালের সংকটের পর সরকার পুঁজিবাজারে প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতা দূর করা; বন্ড, অ্যাসেট ব্যাকড সিকিউরিটিজ, ডেরিভেটিভস ইত্যাদি নতুন প্রডাক্ট চালু; মিউচুয়াল ফান্ড, প্রভিডেন্ড, ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ইত্যাদির মাধ্যমে প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণ বাড়ানো- এসব লক্ষ্যে ক্যাপিটাল মার্কেট ডেভেলপমেন্ট মাস্টার প্ল্যান প্রণয়ন করে। রেগুলেটরি আইন-নীতিমালা সংস্কার ও ইক্যুইটি মার্কেট সংস্কারে বেশ কিছুটা অগ্রগতিও হয়েছে। তবে এখনও অনেক কিছু করার আছে। বিশেষ করে পুঁজিবাজার সংক্রান্ত আইনি জটিলতার দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য বিচারিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করা, কর্পোরেট বন্ডের প্রচলন বাড়ানোর ক্ষেত্রে কর সংক্রান্ত জটিলতা ও আইনি সীমাবদ্ধতা দূর করা এবং সংশ্লিষ্ট সব রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠানের আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জরুরি ভিত্তিতে নজর দিতে হবে।
আইএমএফের প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনটি উৎস থেকে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগের জোগান আসতে পারে। এগুলো হল ব্যাংকিং খাত, বন্ড বাজার ও পুঁজিবাজার। এই তিনটি খাতে পার্শ্ববর্তী ও প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর তুলনায় দুর্বল অবস্থানে আছে বাংলাদেশ।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) উদ্ধৃতি দিয়ে আইএমএফ বলেছে, আগামী পাঁচ বছরে ৮ শতাংশ মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এই লক্ষ্য অর্জনে ২০২০ সালের মধ্যে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুপাত জিডিপির ২৮ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। ২০১৪ সালের হিসাবে তা ২১ শতাংশ আছে। আইএমএফ বলছে, বিনিয়োগের অর্থের জোগানের বেশ কিছু উৎস আছে। এগুলো হল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানের নিজের অর্থ, বিদেশি বিনিয়োগ, ব্যাংক ঋণ ও পুঁজিবাজার। দীর্ঘ মেয়াদে দেশের উন্নয়নকে সচল রাখতে হলে ব্যাংক ও পুঁজিবাজারকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করে পড়ে থাকা সঞ্চয়কে বিনিয়োগের স্রোতে আনতে হবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button