যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়েই জলবায়ু ইস্যু নিয়ে সমঝোতায় জি-২০ নেতারা
শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়েই জার্মানির হামবুর্গে যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হলো দুই দিনব্যাপী জি টুয়েন্টি সম্মেলন। এতে, যুক্তরাষ্ট্র বাদে বাকি ১৯টি দেশের শীর্ষ নেতারা জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন। তারা যুক্তরাষ্ট্রকে বাদ দিয়েই চুক্তির বাস্তবায়নে নিজেদের অঙ্গীকার পুণর্ব্যক্ত করেন। তবে বৃহত্তর স্বার্থে চুক্তির বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভবিষ্যতে তার অবস্থান থেকে সরে আসবেন বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা।
বৈশ্বিক নানা সংকট সমাধানে বিশ্ব নেতাদের নিরব ভূমিকার প্রতিবাদে শনিবার, জি টুয়েন্টি সম্মেলনের শেষ দিনেও হামবুর্গজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। শুক্রবারের সহিংস বিক্ষোভের পর এদিন, জার্মানির দ্বিতীয় বৃহত্তম এ শহরটিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ র্যালীতে অংশ নেন প্রায় তিন হাজার মানুষ। এসময়, শুক্রবারের ওই সহিংস বিক্ষোভের কারণে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচী গণমাধ্যমে তেমন একটা প্রচার না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। এছাড়াও, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে সহিংসতার নিন্দাও জানান র্যালিতে অংশ নেয়া অনেকে।
হামবুর্গজুড়ে এমন প্রতিবাদ-বিক্ষোভের মধ্যেই শনিবার, যৌথ ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুইদিনব্যাপী জি টুয়েন্টি সম্মেলন। যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধিতা সত্তেও, এতে শেষ পর্যন্ত জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যু নিয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছেন বিশ্ব নেতারা। ঘোষণা অনুযায়ী, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে আসার বিষয়টি মেনে নিয়েছে জোটের বাকি ১৯টি দেশ। চুক্তিটিকে অপরিবর্তনীয় উল্লেখ করে, জলবায়ুর পরিবর্তনরোধে যুক্তরাষ্ট্রকে ছাড়াই একসঙ্গে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করে তারা।
অ্যাঙ্গেলা মার্কেল বলেন, ‘প্যারিস জলবায়ু চুক্তি নিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবস্থান দুঃখজনক। তবে, জোটের বাকি ১৯টি দেশ এক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ থাকায় আমি সত্যিই খুব খুশি। যতদ্রুত সম্ভব চুক্তির বাস্তবায়নে যার যার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে হবে। আমি আশা করবো প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৃহত্তর স্বার্থে ভবিষ্যতে তার অবস্থান থেকে সরে আসবেন।’
জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্র সরে আসায় এর ভবিষ্যত নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে। একইসঙ্গে, ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র তার অবস্থান থেকে সরে এসে পুনরায় চুক্তিতে ফিরে আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
থেরেসা মে বলেন, ‘জলবায়ুর পরিবর্তনরোধে এবং চুক্তির বাস্তবায়নে অতীতের যেকোন সময়ের চেয়ে যুক্তরাজ্য বর্তমানে আরও বেশি অঙ্গীকারবদ্ধ। এ চুক্তি কেবল আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকে পরিবেশ বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষাই করবেনা, আমাদের জ্বালানিকে আরও সাশ্রয়ী এবং এর নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। আর তাই আমি বলতে চাই, প্যারিস জলাবায়ু চুক্তির বাস্তবায়নে যুক্তরাজ্য অবশ্যই ভবিষ্যতে অগ্রনী ভূমিকা পালন করবে।’
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রো বলেছেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফিরে আসার বিষয়ে তিনি এখনও আশাবাদি।এছাড়াও, জলবায়ু চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করতে আগামী ১২ই ডিসেম্বর প্যারিসে আরও জলবায়ু সম্মেলন আয়োজন করা হবে বলেও ঘোষণা দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।