এক মুরগি বারবার জবাইয়ের পদ্ধতি বাদ দিন : ফারুকী
ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার ছবিতে দুই দেশের অংশগ্রহণে ভারসাম্য আনার দাবি জানিয়েছেন চলচ্চিত্র নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করে আমাদের (বাংলাদেশিদের) শুধু ভোক্তা বানানো হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
একইসঙ্গে যৌথ প্রযোজনার ছবি নিরীক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে ‘এক মুরগি বারবার জবাই করা’র পদ্ধতি বাদ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
যৌথ প্রযোজনার ছবি স্থগিত করে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে ফারুকী এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন। ফারুকীর স্ট্যাটাসটি পাঠকের উদ্দেশে তুলে ধরা হল-
‘তথ্য মন্ত্রণালয়কে ধন্যবাদ ভারত-বাংলাদেশ যৌথ প্রযোজনার চলচ্চিত্র নীতিমালা মূল্যায়ন ও সংশোধন সুপারিশে নতুন কমিটি তৈরি করার জন্য। এবং আরো ধন্যবাদ জানাই এই কাজের জন্য যোগ্য ব্যক্তিটিকে কমিটির প্রধান করায়। হারুন ভাইয়ের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞা আমাদেরকে একটা সময়োপযোগী নীতিমালা দেবে, এই বিষয়ে আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে। পরে কখনো হারুন ভাইয়ের সঙ্গে কথা হলে বিস্তারিত বলবো। তবে এই ফাঁকে কয়টা কথা বলে রাখি।
কয় সপ্তাহ আগে যখন কোলকাতায় গেলাম তখন বেশ কিছু পত্রিকায় দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিতে হয়েছিল। সেখানে এই কথাগুলো বলেছি। বাংলাদেশ আর ভারতের মধ্যে সত্যিকার যৌথ প্রযোজনা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে যদি দুই দেশের অংশগ্রহণে ভারসাম্য থাকে।
এখন সেই ভারসাম্য মানে কিন্তু এক ছবিতে দুই দেশের দুই পরিচালক থাকা না। দয়া করে এই অদ্ভুত বাধ্যতামূলক ব্যাপার পরিহার করেন। এর কারণেই এই দেশের প্রযোজকের নাম পরিচালক হিসাবে দেখা যায়।
বরং নীতিমালায় এমন ফিল্টার তৈরি করেন যাতে এটা নিশ্চিত করা যায় যে, বছরে দশটা যৌথ প্রযোজনার ছবি হলে ন্যুনতম পাঁচটার গল্প, পরিচালক, এবং লোকেশন যেনো এই দেশের হয়। শিল্পীদের ক্ষেত্রেও ভারসাম্য আনেন।
এতে যেটা হবে, ঢাকা বা কোলকাতা কোথাও অসন্তোষ তৈরি হবে না। কেউ ভাববে না, আমাদেরকে কেবল ভোক্তা বানানো হচ্ছে। তখনই কেবল এটা কাজে আসবে। নাহলে এটা দীর্ঘ মেয়াদে ফলপ্রসূ হবে না এবং এমনকি এটার জন্য অনাকাঙ্ক্ষিত রাজনৈতিক মূল্য দিতে হবে।
আর এই সাফটা চুক্তির আওতায় ছবি বিনিময় জিনিসটা পুরোপুরি নিরুৎসাহিত করা উচিত। এটা অনিয়ম এবং ফাঁকিবাজির সুযোগ তৈরি করে এবং আখেরে যা দুই দেশের সম্পর্কে বাজে চাপ ফেলবে। এটাকে নিরুৎসাহিত করে যৌথ প্রযোজনাকে উৎসাহিত করেন।
আরেকটা কথা, এখন যৌথ প্রযোজনার ছবিকে দুইবার নিরীক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হয়। একটা কমিটি স্ক্রিপ্ট পড়ে অনুমোদন দেয়। তারপর ছবি তৈরি হলে সেই কমিটি ছবি দেখে অনুমোদন দেয়। তারপর সেটা আবার সেন্সর বোর্ড দেখে।
এক মুরগি বারবার জবাই করার এই ক্লান্তিকর পদ্ধতি বাদ দিয়ে সহজ এবং যথাযথ পরীক্ষণের পদ্ধতি বের করুন, দয়া করে।
আপনাদের স্বাগত। সবাই আশা নিয়ে তাকিয়ে আছে যাতে নিয়ম-নীতির মধ্যে সুন্দরভাবে ছবিগুলো তৈরি হয়।’